তাপস হত্যার বিচার দাবি শিক্ষক-সহপাঠীদের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে সংস্কৃত বিভাগের ছাত্র তাপস সরকার নিহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন তার শিক্ষক ও সহপাঠীরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Dec 2014, 03:40 PM
Updated : 20 Dec 2014, 03:43 PM

শনিবার বেলা ১১টায় হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় মিছিল ও মানববন্ধন করেন সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।  

এরপর বিভাগের ২২৫ নম্বর কক্ষে আয়োজিত শোক সভায় এই হত্যার বিচার দাবির পাশাপাশি তাপসের নামে বিভাগের সেমিনার কক্ষের নামকরণের দাবি জানানো হয়।

এসময় সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী অপু পাল বলেন, তাপসের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। লেখাপড়া শেষ করে তাপস একদিন পরিবারের হাল ধরবে এটাই ছিল পরিবারের স্বপ্ন।

“তাই ‍আমাদের দাবি, তাপসের পরিবারকে দশ লাখ ‍টাকা ক্ষতিপূরণ এবং তার পরিবারের দুজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা।”

সংস্কৃত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শান্তি রাণী হালদার বলেন, “তাপস আমাদের নিয়মিত শিক্ষার্থী ছিল। তাপসের মতো এক তরুণ প্রাণের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।

“সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে হত্যকারীদের ফাঁসি হোক- এটাই আমাদের প্রাণের দাবি।”

সভায় শিক্ষার্থীরা তাপসের স্মৃতি ধরে রাখতে বিভাগের সেমিনারের নাম ‘তাপস স্মৃতি সেমিনার’ করার প্রস্তাব দিলে বিভাগীয় প্রধান এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।

ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সব হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিও জানানো হয়।

শোক সভায় অন্যদের মধ্যে সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক রিতা রাণি ধর, শিক্ষার্থী অমিত পাল, মনোয়ার হোসেন, রুবেল সরকার, অটুল কান্তি দেব, রাজন পাল, সঞ্জয় দে, অফিস সহকারী নাজিম উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেন বক্তব্য রাখেন।

গত রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বুদ্ধিজীবী চত্বরে একসঙ্গে ফুল দিয়ে ফেরার সময় ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সংগঠন ভিএক্স ও সিএফসি গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তাপস।

সংস্কৃত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তাপসকে শুরু থেকেই নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছে সিএফসি।

তাপস সরকার

এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করেন তাপসের এক সহপাঠী। পুলিশ অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলাও করে। ঘটনার দিনই ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সিএফসিকে দায়ী করে ভিএক্স। পাশাপাশি গ্রেপ্তারদের মুক্তি দাবি করে শনিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধের হুমকিও দেয় তারা।

পরদিন বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে ‘সংঘর্ষ’ নয়, বরং ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ভিএক্স নেতাকর্মীদের গুলিতে তাপস মারা যান বলে দাবি করেন সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা।

ঘটনার পর ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও হত্যা মামলার প্রথম কাতারের আসামি আশরাফুজ্জামান আশা, শাহরীদ শুভ, এনামুল হোসেন, প্রদীপ চক্রবর্তীসহ গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।