ভারত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, হামিদকে প্রণব

সীমান্ত চুক্তি ও তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যু ‘দ্রুত’ সমাধানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আশ্বাসের পর দেশটির রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেছেন, ভারত সব সময় তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।

সাজিদুল হক নয়াদিল্লী থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2014, 05:56 PM
Updated : 19 Dec 2014, 08:04 PM

শুক্রবার সন্ধ্যায় নয়া দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ে প্রণব মুখার্জি এ কথা বলেন।

বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তি নিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ভারত সব সময় তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।”

শুক্রবার দুপুরে আবদুল হামিদের সঙ্গে এক বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন,  ‘দ্রুত’ এ দুটো বিষয়ের ‘সমাধান’ করা সম্ভব হবে।

১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়। আর ২০১১ সালে তৎকালীন ইউপিএ জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় এর প্রটোকল সই হয়, যার আওতায় দুই দেশের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় হওয়ার কথা।

প্রটোকলটি কার্যকরে ভারতের সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও সে সময় বিরোধী দলে থাকা নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় বিষয়টি ঝুলে যায়।

তবে নানামুখী চাপে থাকা মমতা ৬৫ বছর ধরে ঝুলে থাকা সমস্যাটির সমাধানে সম্প্রতি সম্মতি দিয়েছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়।

মমতার আপত্তির কারণেই একেবারে শেষ মুহূর্তে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ঝুলে যায়, যা মনমোহনের ২০১১ সালের সফরেই সই হওয়ার কথা ছিল।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের সময় প্রণব মুখার্জি বিশ্ব মন্দা সত্ত্বেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন বলে ইহসানুল করিম জানিয়েছেন।

“বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে প্রণব মুখার্জি বলেছেন, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ও জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য।”

বাংলাদেশ থেকে ভারতে আমদানি বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রণব।

আবদুল হামিদ এসময় প্রণবের আতিথেয়তার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণ বিশেষ করে প্রণব মুখার্জির অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবহিনীর অবদানের কথাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রেসিডেন্ট হামিদ।

আকাশবাণী কলকাতায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ওপর লেখা একটি বই এ সময় প্রণব বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে উপহার দেন। আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত 'স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র' ভারতের রাষ্ট্রপতিকে দেন আবদুল হামিদ।

পরে আবদুল হামিদ স্ত্রী রাশিদা খানমকে নিয়ে তার সম্মানে দেওয়া ভারতের রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে অংশ নেন।

নৈশভোজে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অংশ নেন।

ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির আমন্ত্রণে ছয় দিনের সফরে বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লি পৌঁছান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ২৩ ডিসেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।