আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ নৌমন্ত্রণালয়ের নাকচের মধ্যে বৃহস্পতিবার এই মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি একই সুপারিশ করল।
গত ৯ ডিসেম্বরের সুন্দরবনের শেলা নদীতে ওই দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি মোকাবেলায় নৌমন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমেও অসন্তোষ জানিয়েছেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা।
সেই সঙ্গে ফিটনেসবিহীন জাহাজ ঝুঁকিপূর্ণ তেল পরিবহনের সুযোগ পেল কিভাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংসদীয় কমিটি।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবেক পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল, তা নৌ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি। আগে থেকে দুর্ঘটনা রোধে কোনো প্রস্তুতিও ছিল না মন্ত্রণালয়ের।
“অন্তত দুর্ঘটনার পর পরই জাহাজের চারপাশে রাবারের ভাসমান ব্যারিকেড (বুম) করা যেত, তবে এ বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হত। নৌ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রমে আমরা হতাশ।”
ওই দুর্ঘটনার পর সাড়ে তিন লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পড়ে সুন্দরবনের নদী-খালে, যা তোলার কাজে স্থানীয়দের কাজে লাগায় বন বিভাগ।
কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৬০ হাজার ৮০০ লিটার ফার্নেস অয়েল সংগ্রহ করা হয়েছে। আর পানির অক্সিজেনের গড় মাত্রা এখন ৬ দশমিক ৮, যা সহনীয়।
তেল সংগ্রহে চট্টগ্রাম থেকে বিশেষায়িত জাহাজ না পাঠানোর কারণ মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চায় সংসদীয় কমিটি।
“তারা বলেছে, জাহাজটি ছোট হওয়ায় এবং সমুদ্রে চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় সমুদ্র পরিবহনের ছাড়পত্রও পাওয়া যায়নি,” বলেন হাছান মাহমুদ।
দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানের চলাচল নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “নিমজ্জিত জাহাজটির সঠিক কোনো কাগজপত্র ছিল না, ফিটনেস ছিল না। ফিটনেসবিহীন জাহাজ কিভাবে টক্সিক এলিমেন্ট নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল-এ প্রশ্ন আমাদের।”
দুর্ঘটনার পর নৌযান চলাচল সাময়িক বন্ধের সিদ্ধান্ত হলেও ত্রুটিপূর্ণ জাহাজ চলাচল এখনও ওই রুটে চলছে বলে খবর পাওয়ার কথা জানান সংসদীয় কমিটির সভাপতি।
কমিটি অবিলম্বে সুন্দরবনে নৌ চলাচল বন্ধের সুপারিশের পাশাপাশি মংলা ঘাষিয়াখালী ও মোড়লগঞ্জ চ্যানেল খনন করে নৌ চলাচলের বিকল্প রুট চালুর পরামর্শ দিয়েছে।
পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন, উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, কমিটির সদস্য নবী নেওয়াজ, মো. গোলাম রব্বানী, টিপু সুলতান, মজিবুর রহমান চৌধুরী ও মেরিনা রহমান বৈঠকে অংশ নেন।