বৃহস্পতিবার তার পক্ষে আইনজীবী জয়নাল আবেদীন তুহিন সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল দাখিল করেন।
আবেদনে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর দেওয়া ফাঁসির আদেশ বাতিলের পাশাপাশি খালাস চেয়েছেন।
হত্যা ও নির্যাতনের মতো যুদ্ধাপরাধের দায়ে গত ২৪ নভেম্বর মোবারককে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
আপিলে ৭৭টি যুক্তি উপস্থাপন করে খালাস চেয়েছেন এই যুদ্ধাপরাধী। ৮২ পৃষ্ঠার মূল আবেদনের সঙ্গে বিভিন্ন নথিসহ মোট ৮৬২ পৃষ্ঠার আবেদন জমা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী তাজুল ইসলাম।
৬৪ বছর বয়সী মোবারক একাত্তরে আখাউড়ার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার নেতৃত্বেই রাজাকার বাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অপহরণ, লুটপাট, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার মতো অপরাধ ঘটায়।
একাত্তর পরবর্তী সময়ে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি করলেও পরে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১১ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
এর মধ্যে ১ নম্বর অভিযোগে আখাউড়ার টানমাণ্ডাইল গ্রামের ৩৩ জনকে গঙ্গাসাগর দীঘির পাড়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড এবং ৩ নম্বর অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতাকারী আব্দুল খালেককে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।
নিহত আব্দুল খালেকের মেয়ে খোদেজা বেগম ২০০৯ সালের ৩ মে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিচারিক হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন।
ওই বছরের ১৩ মে মোবারক হাইকোর্ট থেকে ৬ মাসের আগাম জামিন নেন। এরপর কয়েক দফা জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০১২ সালের ৬ জুন মোবারকের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলাটি ট্রাইব্যুনালে আসে।
ওই বছরের ১৬ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালায় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি মোবারকের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। ১২ মার্চ অভিযোগ আমলে নিয়ে জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল যুদ্ধাপরাধের পাঁচ ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মোবারকের বিচার শুরু হয়।