খালেদার দুর্নীতি মামলায় বিচারক পরিবর্তন

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটি দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারককে পরিবর্তন করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2014, 06:10 AM
Updated : 18 Dec 2014, 06:33 AM

‘জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট’ ও ‘জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট’ দুর্নীতি মামলা বিচারের দায়িত্বে থাকা ঢাকার বিশেষ জজ-৩ বাসুদেব রায়কে পটুয়াখালীতে বদলি করে বিচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (মতামত) আবু আহমেদ জমাদারকে।

আইন মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এই বদলির আদেশ জারি করে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল শাহীন বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশ অনুযায়ী বাসুদেব রায়কে পটুয়াখলীর বিশেষ জজ আদালতে বদলি করা হয়েছে।”

রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজের অস্থায়ী আদালতে গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ দুটি মামলার বিচার শুরু হয়। মামলা দুটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এ মামলার বিচারক নিয়োগের বৈধতা এবং অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগ পর্যন্ত গেলেও সর্বোচ্চ আদালত তা খারিজ করে দেয়।

এ মামলার আদালত পরিবর্তনের জন্য খালেদার দুটি আবেদন বর্তমানে হাই কোর্টে রয়েছে। 

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে।

এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ ২০১০ সালের ৫ অগাস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

তারেক রহমান উচ্চ আদালতের জামিনে গত ছয় বছর ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আছেন জামিনে। বাকি দুজন পলাতক।

২০১১ সালের ৮ অগাস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।

তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত  কর্মকর্তা।

এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু হতেই পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। খালেদাসহ বাকি দুই আসামি জামিনে রয়েছেন।

শুরুতে পুরান ঢাকার জজ আদালতে এ মামলার কার্যক্রম চললেও চলতি বছর ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের শুনানিতে ব্যাপক হট্টগোল হলে এজলাস ছেড়ে খাসকামরায় বসে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছিলেন বিচারক বাসুদেব রায়।

এরপর নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আদালত বসিয়ে মামলা দুটি বিচারের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচারও আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আদালত বসিয়ে করা হয়েছিল।