মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল নিয়ে প্রশ্ন সংসদীয় কমিটির

৪০ বছর পর সরকারি কর্মকর্তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের কারণ জানতে চেয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2014, 06:43 PM
Updated : 17 Dec 2014, 06:44 PM

এজন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, ওই মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সংসদীয় কমিটি। বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কমিটির আগামী বৈঠকে তাদের ডাকা হবে।

জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেওয়ার বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে ধরা পড়ার পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত সেপ্টেম্বরে তিন সচিব ও এক যুগ্মসচিবের মুক্তিযুদ্ধে সনদের গেজেট বাতিল করে।

তারা হলেন-স্বাস্থ্য সচিব নিয়াজ উদ্দিন মিয়া, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সচিব এ কে এম আমির হোসেন এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী এবং যুগ্ম-সচিব আবুল কাসেম তালুকদার।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানের (বর্তমানে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদায় বেসরকারিকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান) মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেট স্থগিত করা হয়।

এরপর এদের কাউকে অবসরে এবং কারও চাকরি ছাড়ার মধ্যে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের আরও ১৬ জন কর্মকর্তার সনদ জালিয়াতির খবর গণমাধ্যমে এসেছে।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেওয়া সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের ঘোষণার মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলল।  

কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে এই বিষয়ে সংসদীয় কমিটি জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়,  মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের সনদ বাতিল করেছে। তার আগে দুদক অভিযোগ তদন্ত করেছে। এক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোনো ভূমিকা নেই।

তবে মন্ত্রণালয়ের এই জবাব কমিটি গ্রহণ না করে বলেছে, ৪০ বছর পর চাকরির শেষ সময়ে এসে এই সনদ বাতিল করে তাদের মর্যাদাহানি করা হয়েছে।

কমিটির সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, “কিভাবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটা কমিটি জানতে চায়। কারণ যাচাই-বাছাই করলে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর সনদ যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন।

“আর মুক্তিযোদ্ধার সুনির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। এসব বিষয়গুলো নিয়ে কমিটি সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে আলোচনায় আগ্রহী।”

আগামী বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।

গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সভায় মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা ঠিক হয়েছে। এতে বীরাঙ্গণাদেরও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে ঠিক হয়েছে, একাত্তর সালে যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে ছিল, তারা মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ পড়বেন।