অভিযানে সঙ্গে নিল পুলিশ, ফেরত আনল গুলিবিদ্ধ অবস্থায়

চট্টগ্রামে সোনার দোকানে ডাকাতির তিনদিন পর পালিয়ে থাকা ডাকাতদের ধরতে গিয়ে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওই ঘটনায় আগে থেকেই গ্রেপ্তার পুলিশের সঙ্গে অভিযানে যাওয়া দুই ডাকাতের পায়ে গুলি লেগেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2014, 04:15 PM
Updated : 17 Dec 2014, 04:15 PM

বুধবার ভোরে নগরীর ফিরিঙ্গিবাজারের লইট্ট্যা ঘাটা এলাকায় ওই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গুলিবিদ্ধরা হলেন-হাসান জমাদার ও মানিক।

পরে বিকালে এক সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে কোতোয়ালী থানার ওসি এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, “ঢাকার খিলক্ষেত থানা এলাকা থেকে সোমবার রাতে হাসান ও মানিক ওরফে টেরাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে পাঁচ ভরি লুণ্ঠিত স্বর্ণ উদ্ধার হয়।

“তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর টিলার নোমান কলোনি থেকে ফয়সাল হোসেনকে, হালিশহর মইন্যাপাড়া থেকে হালিম হাওলাদার এবং মাইলের মাথা থেকে রুমা বেগম ও রিয়াজকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

গ্রেপ্তার রুমা ও রিয়াজের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওসি মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং গোয়েন্দা তথ্যে জানতে পারি ডাকাত দলটির অন্য সদস্যরা চট্টগ্রামেই আছে।

“তারা বুধবার ভোরে একটি বোট নিয়ে ফিরিঙ্গি বাজার থেকে বরিশাল যাবে। এর ভিত্তিতে সঙ্গে থাকা হাসান ও মানিককে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। এসময় ডাকাতরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করে।

“আমরা ২৩ রাউন্ড গুলি করি।  আমাদের সঙ্গে থাকা দুই ডাকাত পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। তিন পুলিশ সদস্যও আহত হন। ডাকাতরা পালিয়ে যায়।”

তিনি বলেন, “বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে থাকা দুই ডাকাত সদস্য হাসান ও মানিক পায়ে গুলি লাগে। আহত হয়েছেন তিন পুলিশ সদস্য। তবে পুলিশের দিকে গুলি ছোঁড়া কোনো ডাকাত গ্রেপ্তার হয়নি।”

“গুলিবদ্ধ ডাকাত সদস্যদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আর আহত তিন পুলিশ সদস্যকে প্রথমে সেখানে ভর্তি করা হলেও, পরে দামপাড়া পুলিশ লাইনে চিকিৎসা নেন,” বলেন তিনি।

ঘটনাস্থল থেকে বন্দুকযুদ্ধ শেষে একটি রিভলবার, একটি বন্দুক, তিনটি পিস্তলের গুলি ও পাঁচটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয় বলে জানানো হয়।

গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর জিপিও ভবনের বিপরীত পাশে ডি এম মার্কেটের নিচ তলায় অপরূপা জুয়েলার্স ও গিণি গোল্ড জুয়েলার্সে গুলি ছুঁড়ে ও বোমা ফাটিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

এসময় পথচারী-দোকান কর্মচারীসহ মোট ১৩ থেকে ১৪ জন আহত হন। এদের মধ্যে পথচারী মো. সৈয়দ ওই রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

শুরুতে পুলিশ ঘটনাটিকে ‘ডাকাতির চেষ্টা’ বলে দাবি করে। পরে দোকান মালিকরা দাবি করে ডাকাতি হয়েছে।

ঘটনার রাতে তল্লাশি চালানোর সময় পাহাড়তলি এলাকায় অস্ত্রসহ ডাকাত দলের সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন বাবুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরে বাবুলকে নিয়ে  অভিযানে যাওয়ার পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডাকাত দলের অপর দুই সদস্য আবুল কালাম ও মনিরকে সনাক্ত করে সে, যার প্রেক্ষিতে তাদেরকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে চার জন নারী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই চক্রে মোট ৭০ জন সদস্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, ভোলা ও বাগেরহাটে ডাকাতির কাজ করে।