র‌্যাবের বর্ণনায় ৭ খুনের আদ্যোপান্ত

কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে হত্যাকাণ্ডে র‌্যাব-১১ এর তৎকালীন অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ তার সহকর্মীরা কে কিভাবে জড়িত ছিলেন, তার বিবরণ উঠে এসেছে বাহিনীর নিজস্ব তদন্তে।

সুলাইমান নিলয়বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2014, 03:44 PM
Updated : 16 Jan 2017, 08:40 AM

একটি হত্যাকাণ্ডে নিজ বাহিনীর কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠলে তার তদন্ত করে সম্প্রতি হাই কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সরকারি এই বাহিনী। বুধবার একটি বেঞ্চে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

র‌্যাবের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার মেয়েজামাই লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদের নির্দেশে পুরো হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এক্ষেত্রে তার অবৈধ আদেশ মেনে চলেন অন্যরা। আর পুরো বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লুকিয়ে রেখেছিলেন তারেক সাঈদ।

চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে দুটি গাড়িতে থাকা নজরুল ও চন্দনসহ সাতজনকে তুলে নেওয়া হয়। তিনদিন পর তাদের হাত-পা বাঁধা লাশ ভেসে ওঠে শীতলক্ষ্যা নদীতে। তবে অপহরণের দিনই সাতজনকে হত্যা করা হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সারাদেশে তোলপাড় করা এই ঘটনায় অপহৃতদের উদ্ধারে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর হলেও তারেক সাঈদ এক্ষেত্রে নিশ্চুপ ছিলেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। র‌্যাবের পাশাপাশি লাশ গোপনের সময় কাউন্সিলর নূর হোসেনের লোকজনের উপস্থিত থাকার তথ্যও উঠে এসেছে।

কাউন্সিলর নজরুলের লাশ উদ্ধারের পরপরই তার শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ তোলেন,  নূর হোসেন অর্থ দিয়ে র‌্যাবের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এরপর র‌্যাব এই অভিযোগ তদন্তে কমিটি করে। তবে হত্যাকাণ্ডের মূল তদন্ত করছে ডিবি, আর সার্বিক তদন্তে কাজ করছে প্রশাসনিক একটি কমিটি।

তারেক সাঈদের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জে বাহিনীর তৎকালীন কর্মকর্তা মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানাকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করে প্রতিবেদন দিয়েছে র‌্যাব। এই তিনজনকেই নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে আনার পর সামরিক বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

র‌্যাবের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৭ এপ্রিল তারেক সাঈদ অধস্তন সহকর্মী আরিফ ও রানাকে বলেছিলেন, কাউন্সিলর নজরুলকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত হলে আদালত থেকে ফেরত যাওয়ার পথে তাকে গ্রেপ্তারে যেন প্রস্তুত থাকে।

নুর হোসেনের করা একটি মামলায় নারায়ণগঞ্জের আদালত থেকে জামিন নিয়ে এক বন্ধুর গাড়িতে কয়েকজনসহ ঢাকায় ফিরছিলেন নজরুল। আর তাদের পেছনেই আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে একই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন আইনজীবী চন্দন সরকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুপুর দেড়টায় লিঙ্ক রোডে স্টেডিয়ামের উত্তরে রাস্তার পশ্চিম পাশে ময়লার ডিপো এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকা আরিফ ও রানাসহ আরও ১১ র‌্যাব সদস্য নজরুলের গাড়ি থামিয়ে আরোহীদের র‌্যাবের গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। ঘটনাটি দেখে ফেলায় চন্দন ও তার গাড়িচালককেও ধরে আনা হয়।

সাতজনকে জোর করে একটি গাড়িতে তুলে ওই গাড়িটি নরসিংদীর পথে রওনা হয় বলে র‌্যাবের তদন্তে জানা গেছে। তবে রানা এই গাড়িতে উঠেননি। তিনি অন্য গাড়ি নিয়ে ফিরে যান নারায়ণগঞ্জে। তাকে আর অন্যদের সঙ্গে দেখা যায়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেলা ৩টার দিকে অপহৃতদের নিয়ে র‌্যাবের গাড়িটি নরসিংদীতে র‌্যাব ক্যাম্পের কাছে যায়। সেখানে খাবার নিয়ে গাড়ির ভেতরেই দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সারেন তারা। রাত ৮টার দিকে তারা পুনরায় নারায়ণগঞ্জের পথে রওনা হন।

নজরুলের লাশ উদ্ধারের পর স্ত্রী সেলিনার আহাজারি

পথে ভুলতায় বিপরীত দিক থেকে আসা সৈনিক আসাদকে দেখে র‌্যাবের গাড়িটি থামে বলে তদন্ত কমিটি জানতে পেরেছে। “আরিফ গাড়ি থেকে নেমে সৈনিক আসাদের কাছ থেকে একটি কাপড়ের ব্যাগ নেয়। ওই ব্যাগে অজ্ঞান করার ইনজেকশন ছিল বলে জানা যায়।”

এরপর আরিফের নির্দেশে সাতজনকে ইনজেকশন পুশ করে অচেতন করা হয় এবং কিছুক্ষণ পর মেজর আরিফ নিজে এবং হিরা মিয়া, বেলাল, পুর্নেন্দ বালা ও তৈয়ব ৭ জনের মুখে পলিথিন পেঁচিয়ে হত্যা করেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

“তারপর তারা কাঁচপুর ব্রিজের ল্যান্ডিং স্টেশনে পৌঁছায়। সেখানে তারা ৮-১০ জন লোক দেখতে পান। প্রতীয়মান হয়, তারা নূর হোসেনের সহযোগী। তারা এলাকাটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল, যেন বাইরের কেউ না আসতে পারে।”

ওই সময় আরেকটি মাইক্রোবাসে করে সার্জেন্ট এনামুল, এমদাদ, বেলাল, তাজুল, নাছির, বজলু ইটের বস্তা ও রশি নিয়ে আসেন উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, আরিফের নির্দেশে ইটের বস্তা ও লাশগুলো আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা ট্রলারে উঠানো হয়।

“এরপর ট্রলার ছেড়ে দিয়ে রাত ১টায় মেঘনার মোহনায় পৌঁছালে আরিফের নেতৃত্বে লাশগুলোর পেট ফুটো করে প্রত্যেক লাশের সঙ্গে ইটের বস্তা বাঁধা অবস্থায় নদীতে ফেলে দেয়। ট্রলারটি লঞ্চ ঘাটে ফিরে এলে সেখানে ছিলেন র‌্যাব-১১ অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ।”

তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও এমএম রানা

তারেক সাঈদ শুরু থেকে কোনো ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হলেও ঘটনা সংঘটনের শুরু থেকে পুরোটা সময় আরিফ ও রানাকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেন বলে র‌্যাবের তদন্তে উঠে এসেছে। আর অপহৃতদের উদ্ধারে যখন বিভিন্ন সংস্থা তৎপর তখন তিনি কোনো নির্দেশনা দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন।

পুরো ঘটনার আদ্যোপান্ত জানলেও সেনা কর্মকর্তা তারেক তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। “কিন্তু মহাপরিচালক, র‌্যাব ও র‌্যাব সদর দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সত্য তথ্য জানাননি।”

বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, নূর হোসেনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আরিফ হোসেন, তারেক সাঈদ মোহাম্মদ এবং এম এম রানা এই সাতজনকে অপহরণ, খুন ও লাশ গুমের সমুদয় কাজের বিভিন্ন পর্যায়ে নিজেদেরকে বিভিন্ন মাত্রায় জড়িত করেছেন।

“অন্যরা এই অপহরণ, খুন ও লাশ গুমের ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দায়িত্বে থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবৈধ আদেশ পালন করে জ্ঞাত/অজ্ঞাতসারে নিজেদেরকে এই ঘটনার সঙ্গে বিভিন্ন মাত্রায় যুক্ত করেছেন।”

নদী থেকে ‍তুলে আনা হচ্ছে লাশ

এই তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক আফতাব উদ্দিন আহমেদ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার গোলাম সারোয়ার ও সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং র‌্যাব-৩ এর মেজর মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান।

বহুল আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে এই পর্যন্ত তারেক সাঈদ, আরিফ ও রানাসহ বাহিনীর ১৬ সদস্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন র‌্যাবের নয় সদস্য।

নজরুল ও চন্দন সরকারের সঙ্গে সেদিন যাদের হত্যা করা হয়, তারা হলেন- শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সহসভাপতি তাজুল ইসলাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগকর্মী মনিরুজ্জামান স্বপন ও লিটন, তাদের গাড়ির চালক জাঙ্গীর এবং চন্দনের গাড়িচালক মো. ইব্রাহিম।

নির্দেশ মেনে নজরুলকে গ্রেপ্তার, দাবি তারেকের

কাউন্সিলর নজরুলকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে এসেছে বলে তদন্ত কমিটির কাছে দাবি করেছেন তারেক সাঈদ।

খুনের জন্য সহকর্মী আরিফ হোসেনকে দায়ী করে তারেক দাবি করেছেন, হত্যার খবর প্রকাশের আগে চন্দন সরকারের কথা জানতেনও না তিনি।

তারেক তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, অপহরণের এক মাস আগে র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে নজরুলকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত হয়।

“সেই অনুসারে নজরুল ও তার সাথীরা আদালত থেকে ফেরার পথে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য মেজর আরিফ ও রানা ফোর্সসহ প্রস্তুতি গ্রহণ করে।”

তদন্ত কমিটির মতে ঘটনার জন্য দায়ী তারেক বলেছেন, দেড়টার দিকে আরিফ তাকে জানান, নজরুল ও তার সঙ্গে থাকা চারজনকে র‌্যাবের মাইক্রোবাসেতে উঠিয়ে নরসিংদী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আদালতে তারেক সাঈদ (ফাইল ছবি)

এরপর রানা আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে পরিত্যক্ত একটি গাড়ি সরানোর জন্য একজন ড্রাইভার চেয়েছিলেন বলে জানান তিনি, যে ব্যবস্থা তিনি করে দিয়েছিলেন।

তারেক দাবি করেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের কথা জেনেছিলেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে মেজর আরিফ একটি নৌকার ব্যবস্থা করতে বললে সেই নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন।

তারেকের বক্তব্য অনুযায়ী কারণ হিসেবে আরিফ বলেছিলেন, নজরুলের লোক ঢাকা-চট্টগ্রাম রোড ব্লক করে রাখায় নৌকায় করে আসামিদের ক্যাম্পে আনতে হবে।

রাত ১১টার দিকে কাঁচপুর ব্রিজের নিচে পৌঁছানোর খবর আরিফ জানিয়েছিল বলে তারেক জানান। তিনি বলেন, রাত আনুমানিক দেড়টায় আরিফ তাকে ফোন করে জানান যে এডিজি (অপস) তাকে বারবার ফোন করছে। আরিফ তাকে এডিজির সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

তারেকের বক্তব্য অনুযায়ী, এডিজি ফোন করে তাকে জানান যে, আরিফ টাকার বিনিময়ে এই অপারেশন করেছেন। তিনি আরিফ ও তার দলকে ধৃত আসামিদেরসহ র‌্যাব সদর দপ্তরে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

“তখন আরিফ জানায় যে, সাতজনকে হত্যা করে নদীতে ডুবিয়ে দিয়েছেন। সাতজন কোথায় পেলে জিজ্ঞেস করলে মেজর আরিফ জানায়, রানা আরও দুজনকে অন্য একটি গাড়িতে করে তার নিকট পাঠায়।”

নদীর ঘাট থেকেই মেজর আরিফকে তার সঙ্গীয় ফোর্সসহ র‌্যাব সদরদপ্তরে পাঠিয়ে দেন বলে র‌্যাব-১১ এর তারেক দাবি করেন।

অপহরণ-গুমে তারেকই জড়িত: র‌্যাব

অপহরণের এক মাস আগেই নজরুলকে গ্রেপ্তারে র‌্যাব সদর দপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে তারেক সাঈদ যে দাবি করেনে, তা বাহিনীর শীর্ষ দুই কর্মকর্তা নাকচ করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়।

বাহিনীর মহাপরিচালক মো. মোখলেসুর রহমান তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করার জন্য বলা হয় না।

“অপরাধীদের তালিকা র‌্যাব সদর দপ্তরে থাকে না। নারায়ণগঞ্জের এই ঘটনায়ও কাউকে গ্রেপ্তারের কোনো নির্দেশনা র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে দেওয়া হয়নি।”

তিনি জানান, ২৭ এপ্রিল ঘটনার পরপরই নারায়ণগঞ্জের এসপি তাকে তা জানিয়ে অপহৃতদের উদ্ধারে সহায়তা চেয়েছলেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে র‌্যাব-১১ অধিনায়ক তারেক সাঈদকে অপহৃতদের উদ্ধারের জন্য বলেন।

ঘটনার সঙ্গে র‌্যাব কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি পরদিন জানতে পারেন বলে জানান মোখলেসুর রহমান।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান তদন্ত কমিটিকে বলেন, সাতজনকে অপহরণের খবরটি তিনি প্রথম গণমাধ্যমে দেখেন। এরপর বিষয়টি জানতে চাইলে র‌্যাব-১১’র অধিনায়ক তাকে জানান যে ঘটনা উদ্ঘাটনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

জিয়াউল আহসান (ফাইল ছবি)

কর্নেল জিয়াউল বলেন, ঘটনার পর তারেক তিনি ছাড়াও র‌্যাবের ডিজি ও গোয়েন্দা শাখার পরিচালকের কাছে সত্য গোপন করেন।

“পরে গোয়েন্দা শাখা নজরদারি শুরু করলে ঘটনার সঙ্গে তারেকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এক পর্যায়ে তারেক ও আরিফকে অফিসে ডেকে পাঠালে তারেক নিজে না এসে আরিফকে পাঠায়।”

“মেজর আরিফ জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে। পরে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তাকে দেখানো হলে অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলে তাদের সংশ্লিষ্টতার কথা জানায়।”

জিয়াউল আহসান বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর বিবেচনায় পরদিন র‌্যাবের ওই তিন কর্মকর্তাকে সদরদপ্তরে সংযুক্তির আদেশ জারি করা হয়। সেনা সদরের নির্দেশনা পাওয়ার পর ২৯ এপ্রিল তিনজনকে নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়।

র‌্যাবের শীর্ষ পর্যায়ের এই কর্মকর্তা বলেন, অধিনায়কই একটি ব্যাটালিয়নের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। তারেক সাঈদ অতি গোপনে অপহরণ, খুন ও লাশ গুমের কাজ সম্পাদন করেন।

প্রতিবেদনে প্রাপ্ত তথ্যাবলী অংশে দাবি করা হয়, ২৭ এপ্রিল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা নিশ্চিত হয় যে, অপহরণের ঘটনার সঙ্গে আরিফ ও তারেক জড়িত। কিন্তু র‌্যাব অধিনায়ক তথ্য গোপন করায় সদর দপ্তর বিভ্রান্ত হয় এবং অপহৃতদের জীবিত উদ্ধারে ব্যর্থ হয়।