ঢাকায় উৎসবে মাতলেন গারোরা

শহরের কোলাহলে পাহাড়ি জুম শস্য বরণের ঐতিহ্যবাহী আনুষ্ঠানিকতা ‘ওয়ানগালা উৎসব’ পালন করেছে গারো সম্প্রদায় সদস্যরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2014, 04:48 PM
Updated : 28 Nov 2014, 04:49 PM

শুক্রবার রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে দিনব্যাপী এই উৎসবের শুরু হয় গারো শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে। ঢাকায় বসবাসকারী মান্ডি সমাজের নারী-পুরুষরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

বিকালে ওয়ানগালা উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।

এসময় খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশে একধর্মের উৎসবে অন্য ধর্মের অনুসারিদের অংশ নেয়ার ঐতিহ্য আছে। স্বাধীন বাংলাদেশে জাতী-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার রয়েছে। সাংবিধানিকভাবে এই অধিকার সংরক্ষিত।”

বাংলাদেশ সৃষ্টিতে গারোদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গারোরা ১৯৭১ সালের মুক্তি যুদ্ধের সময় রক্ত দিয়েছিল। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার সময়ও তারা প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিল।

“বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশকে সাম্প্রদায়িক করার চেষ্টা হয়েছিল। এখনও সেই চেষ্টা অব্যাহত আছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সেই চেষ্টা রুখে দেব।”

দেশের উন্নতি ও সম্বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে ভবিষ্যতে যেকোন প্রয়োজনে গারো-হাজংদের অব্যাহত সমর্থন চান খাদ্যমন্ত্রী।

“প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন হচ্ছে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হবো। ’৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের সারিতে গিয়ে দাঁড়াবো। ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্ম সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চলবে। সেজন্য সব সম্প্রদায়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে,” বলেন তিনি।

আলোচনা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অর্পিত দাঙ্গ, যিনি গারো সমাজে লোকমা বা গ্রাম অধিপতি হিসেবে সমাদৃত। গারো ভাষায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুরোহিত জংসন ম্রি, গারোদের কাছে যার ধর্মীয় পরিচিতি ‘খামাল’।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা দ্বিরাজ কুমার নাথ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, গুলশান থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি একেএম জসিম উদ্দিন, গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী সুলতান হোসেনসহ অন্যান্যরা অনুষ্ঠনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

এর আগে দিনভর ঐতিহ্যবাহী আমুয়া, রুগালা ও সাসাৎ সওয়ার আনুষ্ঠানিকতা হয় বিদ্যালয়ের মাঠে। পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা গারো পোশাকে সজ্জিত হয়ে জুমনৃত্য প্রদর্শন করেন।  

ওয়ানগালা গারোদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। শস্য দেবতা মিসি সালজং এর সম্মানে ওয়ানগালা উৎসব করে গারোরা।  

পাহাড়ি জুম চাষকে কেন্দ্র করে বড় আকারে এই উৎসব পালন করা হয়। ঢাকায় বসবাসরত গারোরা একযুগ ধরে ওয়ানগালা পালন করে আসছে।