সড়কটির উদ্বোধনের অপেক্ষায় এক বছর

বেনাপোল বন্দরের প্রধান সড়কে যানজট কমাতে পাঁচ কিলোমিটার ‘বাইপাস সড়কের’ নির্মাণ কাজ এক বছর আগে শেষ হলেও উদ্বোধন না হওয়ায় এখনও অব্যবহৃত পড়ে আছে।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2014, 03:31 PM
Updated : 29 Nov 2014, 05:23 AM

এ কারণে বন্দর এলাকায় নিত্য যানজট লেগেই রয়েছে। এলাকাবাসী সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের মন্ত্রীর কাছে সড়কটি চালুর দাবি জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়াডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক মশিয়ার রহমান জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ২০১৩ সালের ৭ জুন বাইপাস সড়ক পরিদর্শনে এসে অসন্তোশ প্রকাশ করেন এবং নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। ওই বছরের ৩০ জুলাই সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়, কিন্তু এখনও সড়কটি ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি।

তিনি জানান, বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাকের জটলা কমাতে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় যৌথভাবে ২০০০ সালে বেনাপোল স্থল বন্দর চেক পোস্ট নোম্যান্সল্যান্ড থেকে কাগজপুকুর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণের কাজ হাতে নেয়।

এর মধ্যে ৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব নেয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, আর ২ কিলোমিটার সড়কের দায়িত্ব থাকে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি আরও বলেন, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ২ কোটি টাকা ব্যয়ে তাদের অংশের ২ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করে ২০০২ সালে।

অসমাপ্ত ৩ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ ২০০২ সালে শুরু করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

তারা প্রথমে জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাটের কাজ শুরু করলেও মাঝপথে এসে সড়কটির নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১২ সালে সড়কটি চূড়ান্তভাবে নির্মাণের কাজ শুরু করে তারা।

২০১৩ সালের ৭ জুন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাইপাস সড়ক পরিদর্শনে এসে অসন্তোশ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেন।

ওই বছরের ৩০ জুলাই সড়কটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়, যা বর্তমানে পুরোপুরি ব্যবহার যোগ্য।

যশোরের সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এক বছর আগে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ করেছি, কিন্তু এটি ব্যবহার করা হচ্ছে না কেন তা আমরা বলতে পারব না।”

বেনাপোল বন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহসিন মিলন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেনাপোল বন্দরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বাইপাস সড়কটি ব্যবহৃত না হওয়ায় বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেক পোস্ট দিয়ে যাতায়াতকারী দেশি-বিদেশি যাত্রীসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মহসিন আরও বলেন, “রপ্তানি পণ্য নিয়ে প্রতিদিন যেসব ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যান বন্দরে আসছে এবং বন্দর থেকে আমদানি পণ্য নিয়ে যারা দেশের অভ্যন্তরে যাচ্ছে তারা সকলেই যশোর-কোলকাতা মহাসড়কটি ব্যবহার করছে। আবার ওই একই সড়ক দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রীরাও যাতায়াত করছে।”

বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিমুদ্দিন গাজি বলেন, সড়কটি ব্যবহার করতে পারলে বন্দরের যানজট থাকবে না। যানজটের কারণে পণ্যবাহী ট্রাক ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা পড়ে থাকে।

বন্দরের শীর্ষ ব্যবসায়িক সংগঠন কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং অ্যাজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন সহজ করা ও এখানকার নিত্যদিনের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে এই বাইপাস সড়কটি নির্মাণ করা হয়, কিন্তু কী কারণে সড়কটি ব্যবহার করা হচ্ছে না তা আমাদের জানা নেই।”

সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর কাছে সড়কটি চালুর দাবি জানান তিনি।