সোনালী আমনে কৃষকের হাসি

এই হেমন্তে কাটা হবে ধান, আবার শূন্য গোলায় ডাকবে ফসলের বান- সুকান্তের কবিতার এই পংক্তি হেমন্তের বাংলার চিরচেনা রূপ। এই ঋতুর সৌন্দর্যের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো মাঠভরা সোনালী আমন। কৃষকের ঘরে ঘরে নতুন ধানের গন্ধ। মেতে উঠছে নবান্ন উৎসবে।

আসাদুজ্জামান সুমন দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2014, 11:33 AM
Updated : 28 Nov 2014, 11:33 AM

ঢাকার দুই উপজেলা দোহার ও নবাবগঞ্জে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠে এখন শুধুই পাকা ফলন। ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষাণ-কৃষাণীরা এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কষ্ট সার্থক হওয়ায় সবার মুখে হাসি ফুটেছে।

অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে চাষিরা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন এবার আমনের বাম্পার ফলন হবে, যদি না হঠাৎ কোনো দুর্যোগ হয়।

দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় জানায়, এ দুই উপজেলায় চলিত মৌসুমে ৮ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও  অনেকটা ভাল হয়েছে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধানের এই ফলন কৃষকদের কাছে সন্তোষজনক। বাজারে ধানের দামও বাড়তে শুরু করেছে। 

এলাকার হাটবাজারে প্রতিমণ ধান ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৬৪০-৬৫০ টাকা দরে।

দোহারের মইতপাড়া গ্রামের চাষি আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এক বিঘা জমি লিজ নিতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা দিতে হয়। তার মতে চলিত মৌসুমে ধানের উৎপাদন মোটামুটি ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে তাতে আমাদের লাভ না হলেও লোকসান হবে না।”

নবাবগঞ্জের বাগমারা বাজারের চাল ব্যবসায়ী মো. রতন বলেন, “নতুন ধান বাজারে এলেও চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কমার সম্ভাবনা নেই  বলে মনে হচ্ছে।”

একই উপজেলার ধুবলীর চাষি আমিনুল ইসলাম জানান, ২ বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন করতে যে খরচ হয়েছে ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে চলিত বছর গো খাদ্য খড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এবং ভালো দাম পাওয়ায় খড় বিক্রি করে লোকসান অনেকটা পুষিয়ে নিচ্ছেন তারা।

তবে, সারের মতো কীটনাশকের মূল্য ‘সহনীয়’ হলে চাষাবাদে তারা আরও অনেক লাভবান হতে পারবেন।

দোহার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভালো। বর্তমানে বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে কৃষদের কোনো লোকসান থাকবে না, বরং কিছুটা হলেও লাভবান হবেন তারা।

এছাড়া পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় এ বাবদ খরচ কম হয়েছে।

তিনি আরও জানান, চলিত মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে ধান চাষে খরচ হয়েছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা এবং বিক্রি করে পাচ্ছেন ১২-১৪ হাজার টাকা।