১ কোটি ৩০ লাখ প্রবীণ পাচ্ছেন জ্যেষ্ঠ নাগরিকের স্বীকৃতি

জ্যেষ্ঠ নাগরিকের স্বীকৃতি পাচ্ছেন বাংলাদেশের ষাটোর্ধ্ব ১ কোটি ৩০ লাখ নাগরিক, যে স্বীকৃতি তাদের সরকারি বিভিন্ন সুবিধা এনে দেবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2014, 02:34 PM
Updated : 26 Nov 2014, 02:52 PM

আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তাদের জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসাবে ঘোষণা করবেন।

জ্যেষ্ঠ নাগরিকরা (সিনিয়র সিটিজেন) স্বল্প মূল্যে ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য, আবাসন ও যানবাহনে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

৬০ বছর ও তার বেশি বয়সীদের জ্যেষ্ঠ নাগরিকের স্বীকৃতি দিয়ে ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর জাতীয় প্রবীণ নীতিমালার খসড়া অনুমোদন করে সরকার।

প্রবীণদের জ্যেষ্ঠ নাগরিক ঘোষণার জন্য প্রবীণ বিষয়ক জাতীয় কমিটি জাতীয় অধ্যাপক এম আর খানের নেতৃত্বে একটি কোর কমিটি গঠন করে। এই কমিটি একটি অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত করেছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. হোসেন মোল্লা বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক প্রবীণকে অবহেলার স্বীকার হতে হয়। তাদের নিয়ে এর আগে সরকারি পর্যায়ে কোনো কাজ হয়নি। সরকার তাই তাদের জন্য কিছু করতে চায়।”

১৯৯৬ সালে জনপ্রতি ১০০ টাকা করে ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা বয়স্কভাতা দেওয়া শুরু হয় বলে জানান হোসেন মোল্লা।

“বর্তমানে ২৭ লাখ ২৩ হাজার মানুষকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৩০০ কোটি টাকা বয়স্ক ভাতা দেওয়া হচ্ছে।”

যুগ্ম-সচিব জানান, বড় বড় হাসপাতালে আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ বয়স্কদের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য জেরিয়েট্রিক মেডিসিন বিভাগ খোলা হবে।

বাংলাদেশের ৯০টি হাসপাতালে এই বিভাগ স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে হোসেন মোল্লা বলেন, “ওইসব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এক লাখ করে টাকা দেওয়া হবে। ওই টাকায় তারা প্রবীণদের জন্য আলাদা কর্নার, বেড ও স্বল্পমূল্যে ওষুধের ব্যবস্থা করবেন।

“প্রবীণরা যেন সহজে ও স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা পান আমরা তা নিশ্চিত করতে চাই।”

অ্যাকশন প্ল্যানে সরকারি-বেসরকারি ভবনে প্রবীণদের ব্যবহার উপযোগী আলাদা কক্ষ রাখতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে যুগ্ম-সচিব বলেন, অনেক বাসায় ‘সার্ভেন্টরুম’ থাকলেও প্রবীণদের জন্য আরামদায়ক আলাদা কোনো কক্ষ নেই। হুইল চেয়ার নিয়ে তারা যেন চলাফেলা করতে পারেন, সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারেন তা নিশ্চিত করা হবে।

ফাইল ছবি

 

সব ধরনের পরিবহনে প্রবীণদের জন্য আসন সংরক্ষণ ছাড়াও স্বল্পমূল্যে ভ্রমণের ব্যবস্থা রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

“প্রবীণদের কাছ থেকে বিমানের ভাড়াও যেন কম রাখা হয় আমরা সেই প্রস্তাব করব।

“জ্যেষ্ঠ নাগরিকের স্বীকৃতি পাওয়া প্রবীণরা যেন তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিচারিক জ্ঞান সমাজের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে কাজে লাগাতে পারেন সেজন্য তাদের ভাতাও দেওয়া হবে।”

এছাড়া বিপথগামীদের ভালো পথে ফেরাতে প্রবীণদের কাজে লাগাতে অ্যাকশন প্ল্যানে পরিকল্পনা রাখা হয়েছে বলে জানান হোসেন মোল্লা।

জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের পরিচয়পত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রবীণদের আলাদা পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। গোলাপি রঙের কার্ডে সিনিয়র সিটিজেন লেখা থাকতে পারে, অথবা আলাদা লোগো ব্যবহার করে তাদের আলাদা কার্ডও দেওয়া হতে পারে।”

যুগ্ম-সচিব জানান, জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের পরিচয়পত্রের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে তিনটি সভা করেছে।

“জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের নিয়ে এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। আইনটি পাস হলে প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন গঠন করে জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের সার্বিক বিষয় দেখভাল করা হবে।”