লোপার ময়নাতদন্তও আবার করার নির্দেশ

হুমায়ূন আহমেদের ধারাবাহিক নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’র টুনি চরিত্রের অভিনেত্রী নায়ার সুলতানা লোপার লাশ পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2014, 11:05 AM
Updated : 26 Nov 2014, 12:40 PM

ডা. শামারুখ মাহজাবিনের লাশ পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তুলতে বলার একদিন বাদে বুধবার লোপার ক্ষেত্রেও একই নির্দেশ দিলেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম বিকাশ কুমার সাহা।

লোপার ঝুলন্ত লাশ গত ১৬ অক্টোবর রাজধানীর গুলশানে তার শ্বশুরবাড়িতে উদ্ধারের পর হত্যার অভিযোগ তোলেন তার মা রাজিয়া সুলতানা। লোপার স্বামী আলী আমিনের বিরুদ্ধে মামলাও করেন তিনি।

এরপর ময়নাতদন্তে লোপার মৃত্যু ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হলে তাতে আপত্তি জানিয়ে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে যান রাজিয়া।

ওই আবেদন গ্রহণ করে লোপার লাশ তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করতে ঢাকার জেলা প্রশাসককে আদালত নির্দেশ দিয়েছে বলে আদালত পুলিশের সংশ্লিষ্ট সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা ফরিদ মিয়া জানান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লাশ তোলার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত, তাতে একজন নির্বাহী হাকিমকেও রাখতে বলা হয়েছে।”

লোপার মায়ের মামলায় আল আমিনের বাবা-মাকেও আসামি করা হয়। ১৬ অক্টোবর মামলার পর আল আমিনকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ।

আলী আমিন দাবি করেন, গুলশানের ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে তার সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে নায়ার আত্মহত্যা করেছেন। আর তখন তিনি বাড়ির বাইরে ছিলেন।

এদিকে লোপার মায়ের মামলার এজাহারে আলী আমিনকে ‘মাদকাসক্ত’ উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, প্রতিদিন লোপাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন আলী আমীন এবং এতে আমিনকে তার বাবা-মা প্রশ্রয় দিতেন।

এজাহারে বলা হয়, এ নির্যাতনের মধ্যেই ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে যে কোনো সময় তারা তিনজন লোপাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখে।

লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে লোপার গলার ডানে এবং বাম হাতের কবজিতে আঘাত সদৃশ চিহ্ন পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।

এরপর গত ১৬ নভেম্বর দেওয়া ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে লোপা ‘আত্মহত্যা’ই করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়।

লোপা নব্বইয়ের দশকে বিটিভিতে প্রচারিত ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকে ‘টুনি’ চরিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন।

নাটকের শেষ পর্যায়ে ‘টুনি’ অসুস্থ হয়ে পড়লে সারা দেশের অসংখ্য মানুষ হুমায়ূন আহমেদের কাছে চিঠি লিখে তার প্রাণ রক্ষার আবেদন জানান।