চুক্তি হলো না কাঠমান্ডুতে

যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতের সহযোগিতা বাড়াতে প্রত্যাশিত তিন চুক্তি না করেই শেষ হলো অষ্টাদশ সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনের কর্মসূচি।  

নুরুল ইসলাম হাসিব কাঠমান্ডু থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2014, 09:45 AM
Updated : 26 Nov 2014, 12:41 PM

বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায় কাঠমান্ডুর ‘রাষ্ট্রীয় সভাগৃহে’ সার্ক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জোটের বিদায়ী চেয়ারম্যান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আব্দুল গাইয়ুম দুই দিনের এ সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

সার্ক নেতৃবৃন্দের বক্তৃতা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেলা সাড়ে ১২টায় চুক্তি স্বাক্ষরের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় নতুন চেয়ারম্যান নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সম্মেলন মুলতবি করেন।

সদস্য দেশগুলো একমত হতে না পারায় সার্ক আঞ্চলিক রেল সহযোগিতা চুক্তি এবং সার্ক পণ্য ও যাত্রীবাহী মোটরযান চলাচল চুক্তি এবার নাও হতে পারে- এমন ইংগিত মঙ্গলবারই দিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

এরপর বিদ্যুৎ সহযোগিতা বাড়াতে সার্ক কাঠামো চুক্তির ‘সামান্য’ সম্ভাবনাকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক চালিয়ে যান সার্ক পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তবে তাদের সে চেষ্টা নিষ্ফলাই থাকে।

বৈঠক সংশ্লিষ্ট একজন বুধবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, ‘পর্দার আড়ালে’ অনেক কিছুই হয়, সুতরাং শেষ পর্যন্ত কি হবে তা বলা যায় না। তবে প্রথম দিনের নির্ধারিত সময়ে চুক্তি না হওয়ায় সেই আশাও টিকল না। বৃহস্পতিবার চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য কোনো সময়ও রাখা হয়নি।   

সম্মেলন শুরুর আগে জোর আলোচনা চললেও মূলত পাকিস্তানের বিরোধিতায় এই তিন চুক্তি আটকে যায়। পাকিস্তান বলছে, তারা এখনো চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত নয়।  

সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সড়কপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে প্রস্তাবিত ‘মোটর ভেহিকলস এগ্রিমেন্ট’ এর খসড়ায় বলা হয়েছিল, এর আওতায় পণ্য ও মালামাল পরিবহনের জন্য ‘কার্গো ভেহিকল’, যাত্রী বহনের জন্য নিয়মিত বাস সার্ভিস এবং পিকনিক, স্টাডি ট্যুর, সামাজিক অনুষ্ঠান বা এ ধরনের উদ্দেশ্যে ভ্রমণকারীদের বহনকারী যানবাহন সীমান্ত পেরিয়ে সদস্য দেশগুলোতে যাতায়াত করতে পারবে।

‘সার্ক রিজিওনাল রেলওয়েজ এগ্রিমেন্ট ফর সার্ক মেম্বারস স্টেটস’ এর খসড়ায় কয়েকটি রুট ব্যবহার করে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান ও পাকিস্তানের মধ্যে আন্তঃদেশীয় রেল নেটওয়ার্ক স্থাপনের কথা বলা হয়।   

আর “সার্ক ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট ফর এনার্জি কো-অপারেশন’ এর প্রস্তাবে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়, যার মধ্য দিয়ে এক দেশের বিদ্যুৎ সহজেই অন্য দেশ কিনতে পারবে। 

 

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে তার বক্তৃতায় বলেন, এসব চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষরিত হবে বলেই তার দেশের প্রত্যাশা।

সব মতপার্থক্য দূরে ঠেলে যৌথ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে আসার জন্যও সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আট সদস্য দেশের নেতৃবৃন্দ ও সার্কের পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার সকাল কাটাবেন কাঠমান্ডু থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে দ্বারিকা রিসোর্টে।  সেখান থেকে ফিরে তারা বসবেন সমাপনী অধিবেশনে, যেখানে সম্মেলনের ‘কাঠমান্ডু ঘোষণা’ চূড়ান্ত করা হবে।   

একইসঙ্গে আগামী সম্মেলন কবে কোথায় হবে- সে বিষয়ে আসবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ইতোমধ্যে পরবর্তী সার্ক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এর আগে চতুর্থ ও দ্বাদশ সম্মেলনও ইসলামাবাদে হয়েছিল।