হজের টাকা জমা জানুয়ারির মধ্যেই

এখন থেকে হজে যাওয়ার সাত মাস আগেই সব কার্যক্রম শেষ করতে হবে গমনেচ্ছুদের। সেক্ষেত্রে ২০১৫ সালে যারা হজে যেতে চান তাদের টাকা জমা দেওয়াসহ সব কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই।

শহীদুল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2014, 06:02 AM
Updated : 26 Nov 2014, 06:02 AM

সৌদি সরকার পুরো হজ কার্যক্রম অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসায় নতুন নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে বাংলাদেশিদেরও।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জাহাঙ্গীর আলম মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সৌদি সরকার বাংলাদেশের ধর্মমন্ত্রীকে অনলাইনে হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠিতে এ ধরনের নির্দেশনা এসেছে।

এ বছরও ১ জুন পর্যন্ত হজের যাওয়ার জন্য বিমান ও বাড়ি ভাড়া পরিশোধসহ হজের আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করার সুযোগ পেয়েছিলেন হজযাত্রীরা।

চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক এজেন্সিকে আবশ্যিকভাবে সৌদি আরবে ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। বাড়ি ভাড়া ও খাবারসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ও পরিশোধ করতে হবে ওই হিসাবের মাধ্যমে।

হজ নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আগামী বছরের হজের বিষয়গুলো চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীর।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হজের কার্যক্রম শেষ করার সময় এগিয়ে আসায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় হজ প্যাকেজ অনুমোদন নেওয়া হবে।

২০১৪ সালের হজ প্যাকেজে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ১০ মার্চ।

চলতি বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীরা ১ জুন পর্যন্ত হজের টাকা (মোয়াল্লেম ফি, বাড়ি ভাড়া, অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ, বিমান ভাড়া ও অন্য টাকা) জমা দিয়েছেন।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অন্য বছর সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তির পরেই হজের কার্যক্রম শুরু হতো। কিন্তু ২০১৫ সালে যারা হজে যাবেন তাদের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য হজ চুক্তির আগেই সৌদি সরকারকে অনলাইনে জানাতে হবে।

আগামী ৬/৭ ফেব্রুয়ারি সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের হজচুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের হজ এজেন্সিগুলোর অনলাইনে নিবন্ধন করার পর সৌদি সরকারের কাছ থেকে একটি আইডি নম্বর ও পাসওয়ার্ড পাবে।

বাংলাদেশ ৮৩৫টি হজ এজেন্সি রয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, “হজ কার্যক্রম অনলাইনে আসার আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যেই হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা দিয়ে অনলাইনে যাবতীয় তথ্য পূরণ করতে হবে। নির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত দেওয়ার পর অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরি লাল থেকে সবুজ রঙ ধারণ করলে নির্দিষ্ট এজেন্সির বিপরীতে ভিসা ইস্যু করা হবে।”

সৌদি সরকারের চিঠিতে বলা হয়েছে, হজ হার্যক্রম অনলাইনের আওতায় আসায় হজ এজেন্সিগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজের হজযাত্রীদের একই সঙ্গে একই ফ্লাইটে এবং একই বাড়িতে রেখে একই ধরনের খাবার পরিবেশন করতে হবে।

বিদ্যমান কোটা অনুযায়ী গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন হজে যাওয়ার সুযোগ পান।

হারাম শরীফ ভেঙে পুনর্নিমাণের কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৯ হাজার ১৯৮ জন হজ করার সুযোগ পেত।

সৌদি সরকার মাসব্যাপী হজের নিবন্ধন কার্যক্রম চালাবে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে (হিজরি সনের ৯ জিলহজ) হজ হবে।

এ বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে ৯৮ হাজার ৭০৫ জন হজ করেছেন।

প্যাকেজ-১ এর মাধ্যমে হজ পালনে খরচ ধরা হয়েছিল তিন লাখ ৫৪ হাজার ৩১৬ টাকা। প্যাকেজ-২ এর মাধ্যমে খরচ হয় দুই লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৬ টাকা। উভয় প্যাকেজেই কোরবানীর জন্য আলাদা টাকা নেওয়া হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, কোটা থেকে কম হজযাত্রী থাকায় এতদিন বাংলাদেশিদের কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি।

কোটার থেকে হজযাত্রী বেশি হলে সমস্যা তৈরি হবে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, এজন্য একটি সফটওয়ার প্রস্তুত রেখেছেন তারা। এর মাধ্যমে অনলাইনে হজযাত্রীদের নিবন্ধনের কাজ করা যাবে।

“কোটা শেষ হয়ে গেলে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের পরের বছরের জন্য অপেক্ষমান রাখা হবে। আর এজেন্সিগুলোর কোটা পূরণ হলে কোটা ফাঁকা আছে এমন এজেন্সি বেছে নিতে বা পরের বছর ওই এজেন্সির অধীনে হজে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে।”

বাংলাদেশের হজ এজেন্সিগুলোর সরকার নির্ধারিত নির্দিষ্ট সংখ্যক লোক হজে পাঠাতে পারে।

ইরানের হজযাত্রী বেশি হওয়ায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিবন্ধনের ১৮ বছর পরও ওই দেশের জনগণ হজে যাওয়ার সুযোগ পান বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

এছাড়া কোটার থেকে হজযাত্রী বেশি হওয়ার ভারতের মানুষ তিন থেকে চার বছর, মালয়েশিয়ার ১১ বছর এবং ইন্দোনেশিয়ার জনগণ নিবন্ধনের সাত বছর পর হজে যাওয়ার সুযোগ পান।