প্রত্যাশার প্রদীপ জ্বেলে শুরু সার্ক শীর্ষ সম্মেলন

তিন চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেই ‘নিবিড় যোগাযোগ, শান্তি ও সমৃদ্ধির’ প্রত্যাশা নিয়ে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হলো অষ্টাদশ সার্ক শীর্ষ সম্মেলন।

নুরুল ইসলাম হাসিবও সুমন মাহবুব, কাঠমান্ডু থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2014, 04:23 AM
Updated : 27 Nov 2014, 11:11 AM

সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ বৃদ্ধি, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার বিষয়গুলো গুরুত্ব পাচ্ছে এবারের সম্মেলনে।

বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায় কাঠমান্ডুর এক্সিবিশন রোডের ‘রাষ্ট্রীয় সভাগৃহে’ নেপালের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

এরপর সার্কের আট দেশের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জোটের বিদায়ী চেয়ারম্যান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আব্দুল গাইয়ুম কাঠমান্ডু সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। রীতি অনুযায়ী এরপর তিনি এবারের স্বাগতিক দেশ নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পক্ষে মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা উদ্বোধনী ভাষণ দেন।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, "ভৌগলিকভাবে কাছাকাছি থাকলেও সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃযোগাযোগের অভাব আমাদের এখনও দূরে সরিয়ে রেখেছে।"

“আমাদের মধ্যে ঐক্য পৃথিবীর অন্য আঞ্চলিক জোটগুলোর তুলনায় কম"- এই মন্তব্য করে তিনি এ অঞ্চলকে দারিদ্র থেকে মুক্ত করতে পারস্পরিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

সুশীল কৈরালা বলেন, "দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক উন্নয়নে সার্ককে শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ ও অর্থবহ করে তুলতে হবে।"

দুই বছর স্থগিত থাকার পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নেপালে এবারের সার্ক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনে অংশ নিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজাপাকসে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আব্দুল গাইয়ুম ও আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি মঙ্গলবারই কাঠমান্ডু পৌঁছান।  

সার্কের মহাসচিব অর্জুন বাহাদুর থাপা এবং যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানসহ নয়টি পর্যবেক্ষক দেশের প্রতিনিধিরাও এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সরকার প্রধানদের পাশাপাশি পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিরাও সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

উদ্বোধনী ও সমাপনী অধিবেশনের ফাঁকে অনানুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও মিলিত হবেন সার্ক নেতারা।

সার্কের ভবিষ্যত গতিপথ নির্ধারণ ও কাঠমান্ডু ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুই দিনের এ সম্মেলন।

সার্ক সম্মেলন উপলক্ষে বুধ ও বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে নেপালে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পাশাপাশি যান চলাচলের ওপরও আরোপ করা হয়েছে কড়াকড়ি।

দুই প্রভাবশালী দেশ ভারত ও চীনের মধ্যবর্তী নেপাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হয়েও বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর একটি। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করছে নেপাল। এর আগে ১৯৮৭ ও ২০০২ সালে সেখানে মিলিত হন সার্ক নেতারা।