শামারুখের মৃত্যু : প্রশ্নবিদ্ধ ময়নাতদন্ত

শামারুখ মাহজাবিনের ময়নাতদন্ত প্রত্যাখ্যানের ঢেউ ছিল ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে, যাতে সক্রিয় রয়েছেন এই চিকিৎসকের সতীর্থ ও বন্ধুরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2014, 07:45 PM
Updated : 30 Nov 2014, 06:29 AM

শামারুখের বেশ কিছু ছবি দেখিয়ে তার সতীর্থরা দাবি করছেন, তাকে হত্যাই করা হয়েছে। পরে প্রভাব খাটিয়ে পাল্টে ফেলা হয়েছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও।

হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর গত ১৫ নভেম্বর রাত ১২টার দিকে জাস্টিজ ফর ডাক্তার শামারুখ মাহজাবিন (Justice For Dr. Shamarukh Mahjabin) (https://www.facebook.com/groups/732197986877334/) নামে একটি গ্রুপ চালু করা হয়। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাত পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৭ জন সদস্য দেখা যায় ওই গ্রুপে।

গত ১৩ নভেম্বর ধানমণ্ডিতে শ্বশুর যশোরের সাবেক আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য খান টিপু সুলতানের বাড়িতে মৃত্যু হয় শামারুখের।

টিপু সুলতান ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বললেও শামারুখের বাবা নুরুল ইসলাম বলছেন, তার মেয়েকে খুন করা হয়েছে।

গত ২৩ নভেম্বর খন্দকার নাহিদ আহমেদ নামে এক ব্যক্তি শামরুখের চার ছবি দিয়ে ওই ফেইসবুক পাতায় ৭টি বিশ্লেষণ দিয়েছেন।

এতে বলা হয, ‘বাম হাত দিয়ে হত্যা করা হয়, তিন আঙ্গুল দিয়ে হত্যা করা হয়, ডানপাশে দুইটা নখের নিখুঁত দাগ, বামপাশে বুড়ো আঙ্গুলের নখের দাগ, বামহাতে ধারালো অস্ত্রের দাগ, জিহবা ভিতরে, আত্মহত্যা হলে জিহবা বের হয়ে থাকবে, চোখ স্বাভাবিক ছিল, আত্মহত্যা হলে চোখ উল্টে যাবার কথা।’

“শামা আপুকে হত্যা করার পর টিপু সুলতানেরা সবাই মিলে নাটক সাজিয়েছে আত্মহত্যার।”

একই ছবি শেয়ার করে শরিফুল লিখেন, “টিপু সুলতান ও তার পরিবার আমার একমাত্র বোন ডা. শামারুখকে হত্যা করার পর নাটক বানিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিল, ক্ষমতা ও টাকার প্রভাবে পোস্ট মরটেম রিপোর্ট পরিবর্তন করে ফেলল।”

শামারুখের লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ‘আত্মহত্যা’ বলা হলেও তা মেনে নেননি বাবা নুরুল ইসলাম। তার আবেদনে ঢাকার আদালত কবর থেকে লাশ তুলে পুনরায় ময়নাতদন্ত করতে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছে।

তবে তাতেও সঠিক প্রতিবেদন পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে ফেইসবুক পাতায় নানা জনের লেখায়।

শাহাদাত পাপন নামে একজন লিখেছেন- “পুন: ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল কোর্ট! কি হবে আবার ময়না তদন্ত করে! খান টিপু সাহেবকে ফেরেশতা বানানোর নতুন নাটক!”

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে শরিফ বাবু নামে একজন লিখেছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, একদিন আপনার বাবাকেও হত্যা করা হয়েছিল, একইভাবে হত্যাকারীদের বাঁচানো হয়েছিল।”

শামারুখ হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে বিএসএমএমইউতে এফসিপিএস করছিলেন।

তার শ্বাশুড়ি টিপু সুলতারে স্ত্রী ডা. জেসমিন আরা বেগম ওই মেডিকেল কলেজেরই অধ্যাপক।

তাকে বয়কটের আহ্বানও জানানো হয়েছে ফেইসবুকের পাতায়।

রিয়ান মুস্তফা নামে একজন লিখেছেন, “যার সঙ্গে এক বাড়িতে তারই পুত্রবধূ ও ছাত্রী নিরাপদে থাকতে পারে না, তার সঙ্গে ক্যাম্পাসে আমরা কিভাবে নিরাপদে থাকব।”

নুরুল ইসলাম তার মেয়েকে হত্যার অভিযোগে যে মামলা করেছেন তাতে জামাতা হুমায়ুন সুলতানের সঙ্গে তার বাবা ও মাকে আসামি করা হয়েছে।

ওই মামলায় রিমান্ড শেষে হুমায়ুন সুলতানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জামিন নিয়েছেন টিপু সুলতান ও ডা. জেসমিন।