নাইকোর ঘুষ: সাক্ষ্য দিলেন কানাডার পুলিশ কর্মকর্তা

নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের কর্মকর্তা লয়েড ডগলাস স্কপ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2014, 05:32 PM
Updated : 25 Nov 2014, 05:32 PM

রাষ্ট্রপক্ষের ২৬ সাক্ষীর মধ্যে ডগলাস ৭ নম্বর সাক্ষী হিসেবে মঙ্গলবার ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ জজ আদালতে সাক্ষ্য দেন। তাকে সহায়তা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

কানাডায় নাইকোর এই দুর্নীতির অনুসন্ধান করেছিলেন ডগলাস স্কপ।

ডগলাস স্কপ আদালতে বলেন, এর আগে কানাডার আদালতে দুর্নীতির মামলায় নাইকো কতৃপর্ক্ষ দোষ স্বীকার করে। পরে তারা কানাডা সরকারের কাছে ক্ষমাও চায়।

কানাডায় নাইকোর কাছ থেকে কিছু দলিলপত্র জব্দের পাশাপাশি বাপেক্স কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথোপকথন এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জবানবন্দি নিয়েছেন বলে জানান কানাডা পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এ সময় তিনি পেনড্রাইভ ও সিডিতে করে ওই সব জবানবন্দি ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিওচিত্র আদালতে দাখিল করেন।

এদিকে ডগলাসের সাক্ষ্য নেওয়ার পর আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শাহ আলম বিচারকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানালে বিচারক হোসনে আরা বেগম মামলাটির পুনরায় কোনো শুনানি নেবেন না জানিয়ে আগামী ২৯ ডিসেম্বর পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন।

পরে বিচারক নথিপত্র ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন বলে জানান আদালতের পেশকার আশিকুর রহমান।

মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, এর আগে এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার রেকর্ডিং কর্মকর্তা সোমা সাহা, বাদী এসএম সাহিদুর রহমান, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) উচ্চমান সহকারী মোশারফ হোসেন, সহকারী পরিচালক মাসুদ আলম ও শাম্মী আক্তার।

সর্বশেষ গত বুধবার মোশাররফের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক মোস্তফা কামাল।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় এই মামলা  করেন দুদকের তৎকালীন পরিচালক সাহিদুর রহমান। কানাডার নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেডের কাছ থেকে কোটি টাকা মূল্যের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি, রেজিস্ট্রেশন বাবদ ২৩ হাজার ৮০৫ টাকা ও কানাডা-আমেরিকা ভ্রমণ বাবদ ৫ লাখ কানাডিয়ান ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করা হয় তার বিরুদ্ধে।

মামলায় বলা হয়, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশারফ হোসেন ফেনী গ্যাসক্ষেত্র থেকে উত্তোলিত গ্যাসের ক্রয়চুক্তি (জিপিএসএ) সম্পাদনের সময় নাইকোকে সুবিধা দিতে নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফের কাছ থেকে এসব সুবিধা নেন।

ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে কাশেম শরীফকেও মামলায় আসামি করা হয়। তিনি মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

২০১২ সালের অগাস্টে দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার পর ১১ অক্টোবর মোশাররফ আদালতে আতœসমর্পণ করে জামিন নেন।

ঘটনার সময় নাইকো গ্যাসের মূল্য প্রতি হাজার ঘনফুট (এমসিএফ) ২ দশমিক ১৫ থেকে ২ দশমিক ৩৫ ডলার পর্যন্ত দাবি করেছিল। তখন এ সংক্রান্ত ক্রয় কমিটি কয়েক দফা বৈঠক করে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করলেও মন্ত্রীর পদত্যাগের পর গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ হয় ১ দশমিক ৭৫ ডলার।

রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) পাশাপাশি পেট্রোবাংলাও এই দুর্নীতির অনুসন্ধান করে।