লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তারে আদালতের তাগাদা

পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দেশে ফেরা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তারে নতুন করে পুলিশকে তাগিদ দিয়েছেন ঢাকার এক মহানগর হাকিম।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2014, 04:49 PM
Updated : 24 Nov 2014, 04:49 PM

আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী

সোমবার আইনজীবী আবেদ রাজার একটি আবেদনের শুনানি শেষে মহানগর হাকিম আতিকুর রহমান রমনা থানা পুলিশকে এই আদেশ দেন।

লতিফ সিদ্দিকীর গ্রেপ্তার নিয়ে সংসদের স্পিকার ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দুই ধরনের বক্তব্য ও ধর্মভিত্তিক কয়েকটি সংগঠনের হরতালের আল্টিমেটামের মধ্যে এই তাগাদা এলো।

গত ২ অক্টোবর বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী ফোরামের নেতা আবেদ রাজা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলা করেছিলেন।

ওইদিন বিচারক লতিফ সিদ্দিকীকে ২৮ অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিলেও তিনি হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।

আবেদ রাজা সোমবার দুপুরে আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তারের আদেশ চেয়ে আবেদনের পর বিকালে আদেশ দেন বিচারক।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের একটি অনুষ্ঠানে হজ নিয়ে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন লতিফ সিদ্দিকী।

ওই অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী বলেছিলেন, “আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীর যতটা বিরোধী, তার চেয়ে বেশি হজ আর তাবলিগের বিরোধী। ”

বিপুল সংখ্যক মানুষ হজে যাওয়ায় দেশের অর্থ আর শ্রম শক্তির ‘অপচয়’ হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে কয়েক ডজন মামলা হয়, যার মধ্যে বেশকয়েকটিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।

এরপর থেকে তিনি পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছিলেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়।

রোববার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে লতিফ সিদ্দিকী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরার পরই বিভিন্ন মহল থেকে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি ওঠে।

বুধবারের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহস্পতিবার সারাদেশে হরতাল পালনের ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী ঐক্যজোট।

এছাড়া লতিফ সিদ্দিকীকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত।

এরই মধ্যে লতিফ সিদ্দিকীর গ্রেপ্তারে স্পিকারের অনুমতি নেওয়া প্রসঙ্গে খোদ স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের দুই ধরনের বক্তব্য এসেছে গণমাধ্যমে।

 মন্ত্রিসভা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যপদ হারালেও এখনো সংসদ সদস্য থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে ‘আইনি জটিলতা’র কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

অন্যদিকে সংসদ চত্বরের বাইরে থেকে কোনো সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে স্পিকারের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী।

লতিফ সিদ্দিকীর সদস্যপদ খারিজ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার বিরোধী ও স্বতন্ত্র সাংসদদের আলোচনায় উত্তপ্ত হয় জাতীয় সংসদ অধিবেশন।