সোমবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকারের নেতৃত্বে আনন্দ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে উল্লসিত জনতার মধ্যে তিন মণ মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
রাজাকার মোবারকের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করে আল মামুন সরকার বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী কলঙ্কমুক্ত হলো।”
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুনুর রশীদ দুলাল বলেন, “এই কুখ্যাত রাজাকার শহরের আনন্দময়ী কালিবাড়ি মন্দিরকে রাজাকার মঞ্জিল করে আশুরঞ্জন দেবের উপর যে নৃশংসতা চালিয়েছে এ রায়ে তার আত্মার শান্তি হবে।”
আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, দ্রুত তার ফাঁসি কার্যকর করা হউক।
এদিকে মোবারক হোসেনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার নয়াদিল গ্রামেও আনন্দ মিছিল করেছে স্থানীয়রা।
মোবারকের মামলার এক নম্বর সাক্ষী নয়াদিল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা দারুল ইসলাম বলেন, “একাত্তর সালে মোবারক টান মান্দাইল গ্রামে ৩৩ জনকে হত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছিল। তার ফাঁসির রায়ে আমি খুশি।”
আখাউড়া থানার ওসি হাম্মাদ হোসেন বলেন, কোন ধরনের নাশকতার আশঙ্কায় রোববার রাতেই ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, নয়াদিল গ্রামের সাদত আলীর ছেলে মোবারক মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর রুকন ছিলেন। তবে দেশ স্বাধীনের পর বেকায়দায় পড়ে সৌদি আরবে গিয়ে সেখানে দুম্বা চড়ানোর কাজ নেন। পরে সেখান থেকে দেশে ফিরলে দুম্বা হাজি হিসেবে এলাকায় নাম রটে তার। এরই মধ্যে টাকা-পয়সার মালিক বনে যাওয়ায় মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সংগঠনটিতে ঢুকে পড়েন। কসবা আখাউড়ার সদ্য সাবেক সাংসদ ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শাহ আলমের হাত ধরেই আওয়ামী রাজনীতিতে তার উত্থান ঘটে।
একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজাকার কমান্ডার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা মোবারক হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মোবারকের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এর মধ্যে ১ নম্বর অভিযোগে আখাউড়ার টান মান্দাইল গ্রামের ৩৩ জনকে গঙ্গাসাগর দীঘির পাড়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৩ নম্বরে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতাকারী আব্দুল খালেককে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।