খালেদার দুই আবেদন খারিজ

জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলা নিয়ে খালেদার দুটি আপিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2014, 03:43 AM
Updated : 24 Nov 2014, 07:44 AM

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।

জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ আমলে নেওয়ার আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে করা খালেদার আবেদন ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর খারিজ হয়ে যায়। এ মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার আবেদনও গত ২৩ এপ্রিল হাই কোর্ট খারিজ করে দেয়।

হাই কোর্টের আদেশ দুটির বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন নিয়েই আপিল বিভাগের গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

এছাড়া জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট নিয়েও তার একটি আপিলের আবেদন আপিল বিভাগের শুনানি পর্যায়ে রয়েছে।

এ মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদার আবেদন গত ২৩ এপ্রিল খারিজ করেছিল হাই কোর্ট। তার বিরুদ্ধেই এই আপিলের আবেদন।

দুদকের দায়ের করা জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সোয়া পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। এ দুটি মামলা বর্তমানে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায়ের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় খালেদার দুই আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি করেন জয়নুল আবেদীন ও এজে মোহাম্মদ আলী। আর সোমবার জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খন্দকার মাহবুব হোসেনের শুনানি করার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. ইকরামুল হক টুটুল ও খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।

এ দুই মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেও সর্বোচ্চ আদালতে এসেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন, তবে তার আবেদন নাকচ হয়ে যায়।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে।

এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ ২০১০ সালের ৫ অগাস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

তারেক রহমান উচ্চ আদালতের জামিনে গত ছয় বছর ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আছেন জামিনে। বাকি দুজন পলাতক।

২০১১ সালের ৮ অগাস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।

তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত  কর্মকর্তা।

এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু হতেই পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। খালেদাসহ বাকি দুই আসামি জামিনে রয়েছেন।

গত ১৯ মার্চ এ দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিচার শুরু করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত।