জজ মিয়ার সাক্ষ্য ‘বৈধ’

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার এক সময়ের আসামি জজ মিয়ার সাক্ষ্য বাতিলের আবেদন মঞ্জুর করেনি হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2014, 10:21 AM
Updated : 23 Nov 2014, 10:51 AM

বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের বেঞ্চে শুনানির পর রোববার আবেদনটির নিষ্পত্তি করে দেন।

আদেশে বিচারক বলেন, “আমরা আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিচ্ছি। আপনাদের আবেদন মঞ্জুর করা হয়নি। তবে ভবিষ্যতের জন্য আপনাদের পথ বন্ধ করলাম না।”

আদালতে আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এ জে মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

মোমতাজ উদ্দিন ফকির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই আদেশের ফলে মামলার পরবর্তী কার্যক্রমে জজ মিয়ার সাক্ষ্য বৈধ হিসাবে থাকল।”

২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। ওই হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পরের বছর ৯ জুন নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বিরকোট গ্রাম থেকে জজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।

‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি’ আদায়ের পর জজ মিয়াকে আসামি করেই চাঞ্চল্যকর এ মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বোনের সঙ্গে আদালত প্রাঙ্গণে জজ মিয়া (গত ৮ সেপ্টেম্বরের (ফাইল ছবি)

কিন্তু পরে অধিকতর তদন্তে দেখা যায়, ওই মামলাকে ‘ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য’ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের নির্দেশে সিআইডি জজ মিয়াকে নিয়ে নাটক সাজানোর চেষ্টা করে। তখনকার তদন্ত কর্মকর্তারাও এখন আলোচিত এই মামলার আসামি।

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জজ মিয়াকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। পরে আদালত মামলা থেকে অব্যাহতি দিলে ২০০৯ সালে মুক্তি পান জজ মিয়া।

অধিকতর তদন্তে সর্বমোট ৫২ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন সিআইডি পুলিশের বিশেষ সুপার আব্দুল কাহহার আকন্দ। তখন জজ মিয়া ও তার মা-বোনকে সাক্ষী করা হয়।

সম্প্রতি জজ মিয়াসহ তার মা জোবেদা খাতুন ও খোরশেদা আক্তার আদালতে সাক্ষ্য দেন। তারা দুজনই বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে জজ মিয়াকে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।

সাক্ষ্যে জজ মিয়া বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে সিআইডির কয়েকজন কর্মকর্তা তাকে হুমকি দিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করেছিলেন। সাক্ষ্য দেওয়ার বিনিময়ে তার পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেওয়া হয়।

আগের আসামি  জজ মিয়া সম্পূরক অভিযোগপত্রে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়ার পর তা মানতে আপত্তি জানিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আবেদন করেন মামলার অন্যতম আসামি কারবন্দি উজ্জ্বল মিয়া।

ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক শাহেদ নূরউদ্দিন গত ১৩ অক্টোবর ওই আবেদন খারিজ করে দিলে উজ্জ্বল ২০ অক্টোবর হাই কোর্টে আবেদন করেন।  

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার এই মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, তৎকালীন মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদও আসামি।