‘নির্বাচন নিয়ে ১৬৬ দেশের প্রশ্ন নেই’

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নভুক্ত ১৬৬টি দেশের কোন ‘প্রশ্ন নেই’ বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির নব নির্বাচিত সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2014, 09:35 AM
Updated : 23 Nov 2014, 09:35 AM

জাতিসংঘে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থানকালে স্থানীয় সময় শনিবার বিকালে নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নিজের মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে সাবের বলেন, "দেশে বর্তমানে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সক্রিয় থাকার কারণেই ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নভুক্ত (আইপিইউ) সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশকে আইপিইউ'র ইতিহাসে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে সভাপতি পদে নির্বাচিত করেছে। এটি বাংলাদেশের বর্তমান সংসদীয় গণতন্ত্রের একটি বিশাল স্বীকৃতি।”

কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়শনের চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন আইপিইউ সভাপতি।

কোন দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যাহত হলে আইপিইউ তার বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রাখে জানিয়ে তিনি অতীতে তিনবার বাংলাদেশের সদস্যপদ স্থগিতের বিষয় তুলে ধরেন।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, "১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর, ১৯৮২ সালে এরশাদের সামরিক শাসন জারির পর এবং ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনে দীর্ঘ মেয়াদী তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার পর আইপিইউতে বাংলাদেশের সদস্যপদ স্থগিত হওয়াই এ সাক্ষ্য বহন করে।"

সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত একেএ মোমেন। অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করেন বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) মামুন-অর রশীদ।

সংসদীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহের এ সংস্থায় সভাপতি পদে কঠিন নির্বাচনী প্রচারাভিযানের বিভিন্ন মুহূর্ত নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সাবের হোসেন চৌধুরী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রশ্নের জবাবে এই সংসদ সদস্য বলেন, "নির্বাচনের প্রচারাভিযানে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছিলেন। আমি যখন তাদের বলেছি যে, একটিমাত্র রাজনৈতিক দল যদি কোন নির্বাচনে না আসে তাহলে কী সে নির্বাচন হবে না? "

"বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে ওই নির্বাচন হয়েছে। এরপর প্রশ্ন উত্থাপনকারীরা এ নিয়ে আর কোন কথা বলা তো দূরের কথা, এমনকি ওইসব দেশও পরবর্তীতে আমাকে ভোট দিয়েছে।"

যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়েও কোন দেশ প্রশ্ন তোলেনি বলে দাবি করেন তিনি।

“এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও কোন উচ্চবাচ্য করেনি। তারাও আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।"

আইপিইউ এবং সিপিএ নির্বাচনে সাম্প্রতিক এ বিজয়ের মাধ্যমে ১৯২টি রাষ্ট্রের জাতীয় সংসদের মধ্যে ১৮৫টির সংসদীয় গণতন্ত্রের নেতৃত্ব এল বাংলাদেশ। এসব দেশের জনসংখ্যা ৬৫০ কোটি।

আইপিইউ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৬৫০ কোটি মানুষের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই বিশাল অর্জনকে ধারণ করে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনাগুলোকে বাস্তবায়িত করতে এখন প্রয়োজন রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।"

দ্রুতই বাংলাদেশে আইপিইউ এবং সিপিএর কার্যালয় খোলা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, "আইপিইউর ভূমিকা অপরিসীম। সামনের বছরগুলোতে গড়ে এক ট্রিলিয়ন ডলার করে ব্যয় করা হবে বিভিন্ন দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে।"

"বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ, শিক্ষা বিস্তার, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য নিরাপত্তা প্রাধান্য পাবে এসব প্রকল্পে। আইপিইউ সমস্ত কার্যক্রমের তদারকি করবে। যাতে কাজগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়।"

দল মত নির্বিশেষে বাংলাদেশের সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে কাজ করলে অদূর ভবিষ্যতেও আইপিইউ ও সিপিএর দুটি পদে বাংলাদেশের প্রার্থীদের জয়ের পথ সুগম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সাবের চৌধুরী।