ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মাসুদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফাতেমা বেগম (২৫) নামের ওই নারী জেএমবির মহিলা শাখার প্রধান। তার সঙ্গে আরো তিনজনকে শনিবার রাতে আটক করা হয়।
তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু জিহাদি বই, বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মাসুদুর রহমান বলেন, মহানগর পুলিশের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
পুলিশের আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে শনিবার রাতে ফাতেমাকে আটকের কথা বলা হলেও ডিবি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবারই কয়েকটি পত্রিকার খবরে ওই নারীকে আটকের খবর জানানো হয়।
একাধিক পত্রিকার খবরে বলা হয়,সম্প্রতি ঢাকা সফরে আসা ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য ও মোবাইল নম্বরের ভিত্তিতেই ফাতেমাকে আটক করতে অভিযান চালানো হয়।
গত ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের খাগড়াগড়ে কথিত জঙ্গি আস্তানায় বিস্ফোরণে দুজন নিহত হওয়ার পর তাতে বাংলাদেশের জঙ্গিদের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানায় ভারতের গোয়েন্দারা।
এরপর ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা তদন্তে নামার পর সন্দেহভাজন ১২ জনকে চিহ্নিত করে তাদের জন্য পুরস্কারের ঘোষণা দেয়।
তাতে সাজিদ ওরফে শেখ রহমাতুল্লাহ ওরফে বুরহান শেখ নামে একজনের জন্য ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে এবং তার বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দায় বলে উল্লেখ করা হয়।
এরপর গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে সাজিদকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় ওই রাজ্যের পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার আদালতের মাধ্যমে নিজেদের হেফাজতে নেয় এনআইএ।
ভারতের গণমাধ্যমে সাজিদের নারায়ণগঞ্জের বাড়ির খুঁটিনাটি প্রকাশের পর ১০ নভেম্বর রাতে র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জের ফরাজীকান্দা এলাকায় গিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করে, যার নাম মোনায়েম হোসেন মনা।
ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি মনাকে কথিত সাজিদের ভাই সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডেও নেওয়া হয়, যদিও সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মনার এক ভাইয়ের নাম মাসুম মিয়া ওরফে মাসুদ। সাজিদ নামে কাউকে সে চেনে না।
একইভাবে পুলিশের সঙ্গেও নামের তালিকা বিনিময় করেন ভারতীয় গোয়েন্দারা।
সে সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, এনআইএর হেফাজতে থাকা শেখ রহমতুল্লাহ সাজিদই যে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের মাসুম সে বিষয়ে তারা ‘অনেকটা নিশ্চিত’ হতে পেরেছেন।
“সাজিদের আত্মীয়-স্বজন ও কাছের লোকদের মাধ্যমে গোয়েন্দারা অনেকটা নিশ্চিত হতে পেরেছে সাজিদই মাসুম। সে ২০০৫ সালে কোটালীপাড়ায় ব্র্যাক ব্যাংকে ডাকাতির মামলায় এবং ২০১২ ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছিল।”