শকুন রক্ষায় ‘অনুসরণীয়’ বাংলাদেশ

অন্যতম বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী শকুন রক্ষায় বাংলাদেশের উদ্যোগ এশিয়া অঞ্চলের অন্যান্য দেশের জন্য অনুসরণীয় বলে মন্তব্য করেছেন একজন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2014, 10:45 AM
Updated : 22 Nov 2014, 01:36 PM

শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শকুন সংরক্ষণ বিষয়ক চতুর্থ বৈঠকে শকুন রক্ষায় সোচ্চার আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘সেভিং এশিয়াস ভালচারস ফ্রম এক্সটিঙ্কশন’-সেইভের প্রকল্প পরিচালক ক্রিস বাউডেন এ মন্তব্য করেন।

বিলুপ্তপ্রায় এই প্রাণী রক্ষায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়ায় কাজ করছে সেইভ।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে এই সংগঠনের সঙ্গে শকুন রক্ষায় কাজ করছে বন অধিদপ্তর।

সভায় জানানো হয়, বর্তমানে পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাত্র ছয় হাজার শকুন আছে। এরমধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে সাদা প্রজাতির পাঁচশ শকুন।

বৈঠকে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাজিবুর রহমান বলেন, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার এবং বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলে ২৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সাদা শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।

“পাশাপাশি শকুনের জন্য ক্ষতিকর হওয়ার কারণে নিরাপদ অঞ্চলে ডাইক্লোফেনাক নামে পশুর শরীরে প্রয়োগযোগ্য একটি ভ্যাকসিন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেটোপ্রফেন নামে অপর একটি ভ্যাকসিনও নিষিদ্ধ করার চিন্তাভাবনা চলছে।”

বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে এসব ভ্যাকসিন গরুর শরীরে প্রয়োগ করা হয়। ভ্যাকসিন নেয়া গরুর মাংস খেলে শকুনের অপমৃত্যু ঘটে বলে জানান প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।

শকুন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে সেইভের কর্মকর্তা ক্রিস বাউডেন বলেন, “বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ ভারত ও পাকিস্তান সরকারের জন্য অনুসরণীয় হবে।”

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, শৈশবে সিলেট অঞ্চলে শকুনসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণী দেখলেও এখন সে সব প্রাণী বিলুপ্তির পথে।

শকুনকে পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর প্রাণী অভিহিত করে তিনি বলেন, “এ ধরনের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী সংরক্ষণে এগিয়ে আসার জন্য শকুনপ্রেমীদের ধন্যবাদ। বাংলাদেশ সরকারও বাঘ ও শকুন সংরক্ষণে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।”

প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি করার জন্য বিশ্বের অনেক উন্নত দেশকে দায়ী করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “তবে বাংলাদেশ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। আমার জানা মতে বাংলাদেশে এক শতাংশও কার্বন নিঃসরণ হয় না।”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বন বিভাগের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক ইউনুস আলী উপস্থিত ছিলেন।