‘গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব যৌক্তিক নয়’

গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দুই দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2014, 11:06 AM
Updated : 21 Nov 2014, 11:06 AM

শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে এক আলোচনা সভায় সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামীকাল (শনিবার) সারাদেশে সিপিবি-বাসদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। এরপর ২৪ নভেম্বর শুধু ঢাকায় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।”

আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্তের আওতায় সব ধরনের গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়ছে আবাসিক খাতের গ্যাসের দাম।

সম্প্রতি জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকের গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পেট্রোবাংলায় পাঠানো হয়েছে, যাতে দুই চুলার গ্যাসের বিল ১ হাজার টাকা এবং এক চুলার সংযোগ ৮৫০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সরকারের এই উদ্যোগ ‘শুভ’ হবে না বলে সতর্ক করেছে বিএনপি। 

ফাইল ছবি

সিপিবি সভাপতি সেলিম বলেন, “বিদ্যুতের দাম, গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এর কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। প্রডাকশন কস্টের বৃদ্ধির অজুহাতে যদি গ্যাসের দাম বাড়ানোর কথা বলেন তাহলেও তা যুক্তিযুক্ত নয়।

“এটা সুস্পষ্ট যে সরকারের এই সিদ্ধান্তে মূলত নিম্নমধ্যবিত্ত ভোক্তারাই ভুক্তভোগী হবেন। ইতোমধ্যে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। তার ওপর সরকারের এই সিদ্ধান্তে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে, সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠবে।”   

তিনি আরো বলেন, “আমরা এখন উইন-উইন সিচুয়েশনে এসে দাঁড়িয়েছি। এবার আর প্রতিবাদ নয়, আমাদের প্রতিরোধের লড়াইয়ে নামতে হবে।”

বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান জানান, সিপিবি-বাসদ পুরো ডিসেম্বর মাসজুড়েই এ বিষয়টি নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে থাকবে।

“২২ ও ২৪ তারিখের কর্মসূচির পর তেল-গ্যাস কমিটির সঙ্গে আমরা বসব এবং যুগোপৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, “এনার্জি খাতে সরকারের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে- এটা সত্য। সরকারের লোকসান হচ্ছে তাও সত্য। কিন্তু এই দায় সাধারণ মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত গ্রাহকরা কেন নেবেন?

“সরকার যদি মনে করে থাকে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলেই এই লোকসান কমানো সম্ভব হবে তাহলে তা ভুল। গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে যদি প্রতিটি বাসা বাড়িতে মিটার সিস্টেম করা যায় তাহলে এই লোকসান অনেক হ্রাস করা সম্ভব।”

জাতীয় তেল গ্যাস ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, “গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের টাকা দিয়ে গ্যাসের উন্নয়ন হয়নি। এই টাকা লুটপাট করা হয়েছে। বিদুৎ উৎপাদনে সরকারের লোকসান হচ্ছে কিন্তু উৎপাদনব্যায় বৃদ্ধির কারণ যদি দুর্নীতি ও ভুলনীতি হয় তাহলে তার দায়ভার জাতির নয়।”

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সিপিবি সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।