সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন হবে: প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2014, 07:24 AM
Updated : 21 Nov 2014, 01:51 PM

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে সশন্ত্র বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনীকে আরো চৌকস করে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা সেনানিবাসের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৫৯ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের হাতে সম্মানী চেক ও উপহার তুলে দেন।

তিনি বলেন, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী শুধু দেশেই নয়, বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। তাই আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে, সে পদক্ষেপ নিয়েছি।”

বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর ২৬ জন সদস্যকে পদকও দেন।

ফাইল ছবি

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবীব, বিমান বাহিনী প্রধান মোহাম্মদ ইনামুল বারী, সাবেক সেনা প্রধান মোহাম্মদ আব্দুল মুবীন, সাবেক নৌ বাহিনী প্রধান জহির উদ্দিন আহমেদ, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান শাহ মো. জিয়াউল রহমান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীসহ ১৪ জনকে বাহিনীর পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া ১২ জনকে দেন ‘অসামান্য’ পদক।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়েছি, সেভাবেই দারিদ্যকে জয় করব।

“বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।”

মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা যারা দুস্থ অবস্থায় আছে, তাদের থাকা-খাওয়া এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা আমরা করে দেব।... প্রত্যেক জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।”

স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৬৭৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠদের ভাতা ১২ হাজার টাকা, বীর উত্তমদের জন্য দশ হাজার টাকা, বীর বিক্রমদের জন্য আট হাজার এবং বীর প্রতীকদের জন্য ছয় হাজার টাকায় উন্নীত করার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতার পরিমাণ ৯০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা  এখন নয় হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাতা পাচ্ছেন।

“সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতার আওতায় আনার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এটা আমরা করব।”

মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রায় ২২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে  ‘ভূমিহীন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ’ নামে যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে- তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৬৪ জেলায় ৬৪টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।