বনানীর বাসায় প্রবাসীর লাশ

রাজধানীর বনানী এলাকার একটি বাসা থেকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যিনি প্রধানমন্ত্রীর দূর সম্পর্কের আত্মীয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2014, 07:03 AM
Updated : 21 Nov 2014, 11:09 AM

মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ (৭২) নামের ওই ব্যক্তি গত ৩ নভেম্বর দেশে আসেন।

বিষয়টি হত্যাকাণ্ড, না অসুস্থতা থেকে মৃত্যু- সে বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত না হলেও বাসার নিরাপত্তারক্ষী ও কেয়ারটেকারসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

বনানী থানার ওসি ভূইয়া মাহাবুব হোসেন বলেন, “স্বজনরা তাকে মোবাইলে ফোনে পাচ্ছিলেন না। শুক্রবার সকালে আত্মীয়রা এসে দরজা ভেঙে দেখেন তিনি মৃত।”

মেজবাহ উদ্দিনের এক আত্মীয় জানান, সকালে তার ফ্লাটের দরজার কাছে এসে মোবাইলে ফোন দেওয়ার পর ভেতর থেকে রিং বাজলেও কেউ ধরছে না দেখে তাদের সন্দেহ হয়। পরে এক কাঠ মিস্ত্রির সহায়তা নিয়ে দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তারা মেজবাহ উদ্দিনকে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

ওসি জানান, মেজবাহ উদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খালাত ভাই শেখ শহীদুল ইসলামের চাচা শ্বশুর।

মেজবাহ উদ্দিনের ভাতিজা শাহেদ জামিলও একই কথা জানান। জাতীয় পার্টির নেতা শেখ শহীদুল ইসলাম নব্বইয়ের দশকে এরশাদ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।

শাহেদ জানান, তার চাচা ১৯৫৮ সাল থেকে লন্ডনে আছেন। সেখানে তিনি এক ব্যাংকে চাকরি করতেন। অবসর নেওয়ার পর তিনি ‘ফ্রেইন্ডস অব বাংলাদেশ’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা খোলেন। ওই প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রামে একটি স্কুল চালায়।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আলামত সংগ্রহ শেষে ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, ফ্লাটে দুটি শোবার ঘর এবং ডাইনিংয়ের সঙ্গেই বসার ঘর। একটি শোবার ঘরের সঙ্গে লাগোয়া বাথরুমের দরজার কাছেই মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় মেজবাহ উদ্দিনের লাশ পড়ে ছিলে।

ওই ঘরের বিছানা, বাথরুম থেকে ডাইনিং হয়ে ড্রইংরুমের লাগোয়া বারান্দা পর্যন্ত মেঝেতে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ ছিল। ফ্ল্যাটে তেমন কোনো দামি আসবাবপত্র দেখা যায়নি।

মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী শ্রীলঙ্কার নাগরিক। তাদের দুই মেয়ে যুক্তরাজ্যেই থাকেন। তিনিই ছয় তলার ভবনের পাঁচ তলায় ওই ফ্ল্যাটের মালিক। আশেপাশের ফ্ল্যাটে তার আত্মীয়রা থাকেন।

তিনি বছরে অন্তত একবার বাংলাদেশে আসতেন এবং এই ফ্লাটে উঠতেন বলে শাহেদ জানান।

বনানীর ওসি জানান, বাসার মালামাল খোয়া যাওয়ার কোনো নমুনা তারা দেখেননি। পাসপোর্ট, প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র এবং বেশ কিছু ডলার ঘরেই ছিল। তবে মৃত্যুর কারণ এখনই বলা সম্ভব নয়।

“পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়।”

ঢাকায় এই ফ্ল্যাট ছাড়া মেজবাহ উদ্দিনের আর কোনো সম্পত্তি আছে কিনা, এসব সম্পত্তি নিয়ে কোনো বিরোধ ছিল কি-না প্রয়োজনে পুলিশ তা যাচাই করবে বলেও জানান ওসি।

মহানগর পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার নুরুল আলম জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। তবে ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে তা হত্যা মামলা হিসাবে নথিভুক্ত হবে।