তবে অভিযোগ অস্বীকার করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এই অভিযোগ ওঠার পর মন্ত্রী অস্বীকার করলে কয়েকজন সাংসদ ‘না, না’ বলে প্রতিবাদ করেন।
বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।
কর্মসৃজন কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না অভিযোগ করে এক সম্পূরক প্রশ্নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রীর উদ্দেশে পীর ফজলুর রহমান বলেন, “দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহীত কর্মসৃজন কর্মসূচির নামে দুর্নীতি চলছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ প্রকল্প ২০ থেকে ৪০ ভাগ বাস্তবায়ন হয় না।”
অপর এক সম্পূরক প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাংসদ সুকুমার রঞ্জন এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একে ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ আখ্যায়িত করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ত্রাণমন্ত্রী মায়া বলেন, “এই কর্মসূচিতে কোনো দুর্নীতি হচ্ছে না। তবে সংসদ সদস্যরা দুর্নীতির বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”
তিনি বলেন, কর্মসৃজন প্রকল্পের তালিকা স্থানীয় পর্যায় থেকে তৈরি করে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পাঠানো হয়। ওই তালিকা প্রস্তুতে সংসদ সদস্যরা সম্পৃক্ত থাকেন আর পরামর্শও দেন।
মন্ত্রীর এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত কয়েকজন সংসদ সদস্য মাইক ছাড়াই ‘না', ‘না' বলে প্রতিবাদ করেন।
গৃহকর্মীর স্বীকৃতি
জামালপুর-২ আসনের সাংসদ ফরিদুল হক খানের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “গৃহকর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে নীতিমালা প্রণয়নের কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।”
নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে বর্তমানে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে দেশে প্রথমবারের মতো গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা প্রণয়ন করা সম্ভব হবে। আর এই নীতিমালা গৃহশ্রমিকদের জন্য আইন প্রণয়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।”
দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ইতোপূর্বে গৃহশ্রমিকদের জন্য কোনো নীতিমালা বা আইন প্রণীত হয়নি বলে জানান মুজিবুল হক।
বেগম ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পীর এক প্রশ্নের জবাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বলেন, পোশাক শিল্পকে ধ্বংস করার হীন উদ্দেশ্যে যারা দুষ্কর্মে লিপ্ত আছে তাদের সনাক্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে শিল্প পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
বর্তমান সরকারের সময়ে শিল্প খাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিল্প পুলিশ সর্তক রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
খাদ্য ঘাটতি নেই
কুমিল্লা-১ আসনের সাংসদ সুবিদ আলী ভূঁইয়ার তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, দেশে বর্তমানে কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের নানামুখী পদক্ষেপে কৃষি, বিশেষত দানা শস্যের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
“২০১৪ সালে দেশে দানা শস্য উৎপাদনের পরিমাণ ৩ কোটি ৬৬ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। তাই ২০১২ সালের পর সরকার বিদেশ থেকে কোনো চাল আমদানি করেনি।”
চালের মজুদ সন্তোষজনক হওয়ায় সরকার হতে সরকার (জি টু জি) পর্যায়ে শ্রীলঙ্কায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল রপ্তানির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।
৯ দেশে সিমেন্ট রপ্তানি
বেগম পিনু খানমের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে নয়টি দেশে সিমেন্ট রপ্তানি হয়।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান, মালয়েশিয়া, বুলগেরিয়া, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে ৫ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সিমেন্ট রপ্তানি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।