বাণিজ্যের ইচ্ছা থাকলে শিক্ষায় নয়: রাষ্ট্রপতি

যারা শিক্ষাকে পণ্য বিবেচনা করে ‘বাণিজ্য’ করতে চান তাদের অন্য কোনো খাতে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2014, 12:18 PM
Updated : 20 Nov 2014, 12:18 PM

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে বেসরকারি ব্র্যাক ইউনির্ভাসিটির নবম সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখনোই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয় এবং তা হওয়া কাম্যও নয়।

“যারা শিক্ষাকে পণ্য হিসাবে বাণিজ্য করতে চায়, তাদের উচিৎ হবে শিক্ষা বাদে অন্য কোনো খাতে বিনিয়োগ করা। তাতে দেশ ও জাতি উভয়ই উপকৃত হবে।”

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান প্রসঙ্গে আবদুল হামিদ বলেন, “সময়ের চাহিদা পূরণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা দুই দশক আগে। ইতোমধ্যে দেশে ৭০টিরও বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।

“কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান বাদে অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিাঙ্ক্ষিত মান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে কি না তা নিয়ে সুধীমহলে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।”

রাষ্ট্রপতি মনে করেন, দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এখনো ‘সঠিক জ্ঞান-চর্চার কেন্দ্র’ হয়ে গড়ে উঠতে পারেনি।

“এখানকার পরীক্ষা পদ্ধতিতে যে ফল পাওয়া যায় তা আহরণ করা ফল; ফলন করা ফল নয়। এমন শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের লোভ আছে, ভক্তি নেই।”

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ‘জ্ঞানের মহাতীর্থে ’ পরিণত করতে না পারলে উচ্চশিক্ষার মূল আদর্শ ও লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, “এসব প্রতিষ্ঠান তখন সার্টিফিকেট প্রদান সর্বস্ব শিক্ষা কেন্দ্রে পরিণত হবে।”

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও শিক্ষানীতির মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আবদুল হামিদ।

সেই সঙ্গে গুণগত শিক্ষার প্রসারে শহর ও গ্রামের পার্থক্য কমিয়ে আনারও আহ্বান জানান তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, “বিষয়কেন্দ্রিক পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যাতে আমাদের গৌরবময় ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে তার উদ্যোগ নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের নৈতিক মানোন্নয়নের ওপরও জোর দিতে হবে, যাতে তারা পরিপূর্ণ মানবসম্পদে পরিণত হয়।”

সমাবর্তনে ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি জাতির প্রতি তাদের দায়িত্বও মনে করিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ।

এ সমাবর্তনে ১ হাজার ৪৯৫ জনকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। এছাড়া দুজন শিক্ষার্থীকে তাদের কৃতিত্বের জন্য দেওয়া হয় স্বর্ণপদক।

এবার সমাবর্তন বক্তা ছিলেন এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

অন্যদের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন ফজলে হাসান আবেদের পক্ষে তামারা হাসান আবেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিব অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।