যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গত ২২ মে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসাবে বার্নিকাটের নাম প্রস্তাব করেন। রীতি অনুযায়ী প্রস্তাবটি সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হয়।
গত ১৭ জুলাই ওই কমিটির শুনানিতে বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশের গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ‘নিঃসন্দেহে ত্রুটিপূর্ণ’ ছিল এবং নিয়োগ পেলে তিনি ওয়াশিংটনের নীতি এগিয়ে নিতে কাজ করবেন।
সিনেট কমিটি গত ১৭ নভেম্বর তার নিয়োগের প্রস্তাবটি ভোটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মঙ্গলবার কণ্ঠভোটে বার্নিকাটের নিয়োগ অনুমোদন পায়।
পেশাদার কূটনীতিক বার্নিকাট যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি গিনি বিসাউ ও সেনেগালে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। তার আগে বার্বাডোজ ও মালাবিতে উপরাষ্ট্রদূতের পদেও ছিলেন তিনি।
২৭ বছরের কূটনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বার্নিকাট দক্ষিণ এশিয়াতেও কাজ করেছেন। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরোতে ছিলেন তিনি। এ সময় তার আওতায় ছিল ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ভুটান।
১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি কাজ করেন যুক্তরাষ্ট্রের নয়াদিল্লি মিশনে। তার আগে ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত নেপাল ডেস্ক অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
সিনেট কমিটির শুনানিতে বার্নিকাট বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে তিনি গত তিন দশকে বিশ্বের পাঁচটি অঞ্চলের আটটি দেশে দায়িত্ব পালন করেছেন।
“আমার দুই ছেলে সুমিত নিকোলস ও সুনীল ক্রিস্টোফার ভারতীয় উপমহাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে এবং তাদের বাবা অলিভিয়ের বার্নিকাটের মতোই পুরো বিশ্বকে নিজেদের ক্লাসরুম বলে মনে করে।”
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘এক গুরুত্বপূর্ণ’ সময়ে ‘কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ রাষ্ট্র বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে দায়িত্ব পালনের জন্য মনোনীত হওয়ায় নিজেকে সম্মানিত বোধ করছেন বলেও উল্লেখ করেন বার্নিকাট।
রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পেলে বাংলাদেশে শ্রম অধিকার ও কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা, মানবপাচার রোধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকি মোকাবেলা, সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষা, মাদক ও অস্ত্র পাচার রোধ এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি অনুসারে কাজ করার আগ্রহের কথা সিনেট কমিটিকে জানান এই কূটনীতিক।
তিনি বলেন, “আমার নিয়োগ চূড়ান্ত হলে আমি বাংলাদেশে জবাবদিহিতার প্রসার এবং মানবাধিকার ও গণতন্ত্র শক্তিশালী করার প্রচেষ্টাকে সহযোগিতা করতে শ্রম দেব।”