কাজী আরেফ হত্যা: ২ আসামির রিভিউ খারিজ, ফাঁসি বহাল

কুষ্টিয়ায় জাসদ নেতা কাজী আরেফসহ পাঁচজনকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করেছে দিয়েছে আপিল বিভাগ।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2014, 05:56 AM
Updated : 19 Nov 2014, 09:18 AM

আসামিরা হলেন- আনোয়ার হোসেন ও রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু। আপিল বিভাগের রায়ের ফলে তাদের দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু করতে আর কোনো বাধা নেই বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন।

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বুধবার আসামিদের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোমতাজ উদ্দিন ফকির। সঙ্গে ছিলেন এআরএম হাসানুজ্জামান। আসামিদের পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন।

কাজী আরেফ (ফাইল ছবি)

১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কালিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাসদ সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদ, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের তখনকার সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরাইল হোসেন ও সমশের মণ্ডল।

ওই ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় ২০০৪ সালের ৩০ অগাস্ট কুষ্টিয়ার জেলা জজ আদালত এ হত্যা মামলায় ১০ জনের ফাঁসি ও ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

এছাড়া তিন আসামিকে খালাস দেন বিচারক। আরেক আসামির বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম হাই কোর্টের আদেশে স্থগিত থাকে।

বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ১০ আসামি হলেন- ইলিয়াস, রাশেদুল ইসলাম ওরফে ঝন্টু, সাফায়েত হোসেন (হাবিব), আনোয়ার হোসেন, শাহিরুদ্দিন, মান্নান মোল্লা, বাকের, রওশন, জাহান ও জালাল।

এছাড়া রাফাত ওরফে রাফা, গারেস, তাসিরুদ্দিন, আসগর জোয়ারদার, নজরুল ইসলাম, ওয়ালিউর রহমান, একুব্বার, টিক্কা ওরফে জাব্বার, লাবলু, ফিরোজ ওরফে ফরু, লাল্টু ওরফে নুরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় কুষ্টিয়ার আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে কারাগারে থাকা রাশেদুল, আনোয়ার ও ইলিয়াস হাই কোর্টে আপিল করেন। বাকিরা পলাতক থাকায় সে সুযোগ পাননি। তাদের মামলা কেবল মৃত্যুদণ্ডাদেশের অনুমতির জন্য হাই কোর্টে আসে।

আপিলের রায়ে হাই কোর্ট যাবজ্জীবনপ্রাপ্তদের দণ্ড থেকে খালাস দেওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শাহিরুদ্দিনকেও খালাস দিয়ে দেয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি আসামিদের দণ্ড কার্যকরের অনুমতি দেয় হাই কোর্ট।

এরপর হাই কোর্টের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের আবেদন করে। অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকায় ইলিয়াস, রাশেদুল ও আনোয়ার হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন।

২০১১ সালের ০৬ অগাস্ট আপিলের রায়ে হাই কোর্টের রায়ই বহাল রাখা হয়। ফলে ইলিয়াস, রাশেদুল ও আনোয়ারের মৃত্যুদণ্ডাদেশও বহাল থাকে।

এর মধ্যে আনোয়ার হোসেন ও রাশেদুল ইসলাম ঝণ্টু পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল আপিল বিভাগ দণ্ড কার্যকরে স্থগিতাদেশ দেয়।

রিভিউ আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি করে বুধবার আদালত তা খারিজ করে দিল।

মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, “এখন আইন অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আসামিরা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারবেন। ক্ষমা না চাইলে তাদের দণ্ড কার্যকর করা যাবে।”