ইবোলা: পশ্চিম আফ্রিকায় ‘নিরাপদে’ বাংলাদেশি সেনারা

পশ্চিম আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাস থেকে রক্ষায় সেখানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশিদের ‘নিরাপদে’ রাখা হয়েছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2014, 03:24 PM
Updated : 18 Nov 2014, 03:24 PM

সেনা সদস্যদের ইবোলা বিষয়ে সতর্ক থাকারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কনসালটেন্ট ফিজিশিয়ান মেজর জেনারেল মো. রবিউল হোসেন জানিয়েছেন।

‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের জন্য ইবোলা প্রতিরোধ প্রস্তুতি’ বিষয়ে জানাতে ঢাকা সেনানিবাসের এএফএমআই মিলনায়তনে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়া ইবোলায় ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ৬টি দেশে ১৪ হাজার ৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর এ পর্যন্ত এতে মারা গেছেন ৫ হাজার ১৬০ জন।

রোগটির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে গিনি, লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওনে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রবিউল হোসেন বলেন, “লাইবেরিয়ায় বাংলাদেশের ৫২২ জন সেনা সদস্য শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন। তারা কেউ ভয়ানক ইবোলা ভাইরাসে এখনো আক্রান্ত হননি। তারা নিরাপদে সুস্থ আছেন। তবে তারা যেন সতর্ক থাকেন সে বিষয়ে দরকারি নির্দেশনাও দেয়া আছে।”

যেসব জায়গায় ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়েছে সেখান থেকে তারা নিরাপদ দূরত্বে রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

“তারা নিজেদের ক্যাম্প ছাড়া বাইরে একেবারে প্রয়োজন না হলে বের হন না। ক্যাম্প থেকে বাইরে বের হলে তাদের স্বয়ংক্রিয় মেশিনে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা হয়,” বলেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা রবিউল।

এছাড়া কারো সঙ্গে হাত মেলানোর আগে সতর্কতা অবলম্বন, হাত ধুয়ে পরিচ্ছন্ন রাখা, শরীরের তাপমাত্রা বেশি মনে করলে কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং সুনির্দিষ্ট প্রয়োজন ছাড়া ক্যাম্পের বাইরে না যাওয়ার ব্যাপারে শান্তিরক্ষীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

পশ্চিম আফ্রিকায় অনেক সময় মরে যাওয়া বন্যপশু বা পাখি সংগ্রহ করে সেগুলো খাওয়া ইবোলায় আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ বলেও সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা জানান, ইবোলা আক্রান্ত ব্যক্তিকে রোগ সনাক্তের পর আলাদা রাখা হয়। এজন্য পশ্চিম আফ্রিকায় বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। চিকিৎসকরা বিভিন্ন প্রতিরোধক ব্যবহার করে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। যদিও এ রোগ পুরোপুরি নির্মূল করার মতো টিকা এখনো আবিস্কৃত হয়নি, তবে সেখানকার নাগরিকরা সতর্কতা মেনে চলছেন।

বাংলাদেশে ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি খুবই কম মন্তব্য করে রবিউল হোসেন বলেন, পশ্চিম আফ্রিকার লাইবেরিয়া, সিয়েরা লিওন ইত্যাদি দেশ থেকে বাংলাদেশে ইবোলা ভাইরাস আসার সরাসরি কোনো পথ নেই।

তাছাড়া সেখান থেকে যেসব শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য দেশে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন তারা দেশে আসার সময়ই নিজেদের প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা করান। এমনকি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।