‘শান্তি এল’ সোহাগপুরে

সর্বোচ্চ আদালত চূড়ান্ত রায়ে মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখায় তার জন্মস্থান শেরপুর কলঙ্কমুক্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসী।

শেরপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2014, 07:38 AM
Updated : 3 Nov 2014, 02:40 PM

সোমবার সকাল ৯টার আগেই কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় বহাল রাখার ঘোষণা দেয় আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ।  

রায় ঘোষণার পর শেরপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু বলেন, “আমারা শেরপুরবাসী আজ কলঙ্কমুক্ত হলাম।”

মুক্তিযুদ্ধকালীন শেরপুরের কুখ্যাত আল বদর নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় বহাল থাকার খবর পেয়েই জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শহরে বের হয় আনন্দ মিছিল। উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ারের নেতৃত্বে জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করেন।

শহীদ গোলাম মোস্তফার ভাই মোশারফ হোসেন তালুকদার মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এ রায়ে খুশি। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার পেয়েছি। দেশ ও শেরপুরবাসী কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।”

উচ্চ আদালতের রায়ে শেরপুর তথা দেশবাসী কলঙ্কমুক্ত হল, মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা শান্তি পেল বলে মন্তব্য করেন মুক্তিযোদ্ধা তালাপতুফ হোসেন মঞ্জু।

আলবদর সদস্য কামারুজ্জামানের নির্যাতন সেলের দারোয়ান ও রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মোহন মুন্সি বলেন, “আল বদর হয়ে যে পাপ করেছিলাম এ রায়ের মধ্য দিয়ে আমার সে পাপ ও  কলঙ্ক মোচন হয়েছে। আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাই। রায়ে আমি খুব খুশি।”

রায়ে সন্তোষ জানিয়ে মামলার সাক্ষী মজিবর রহমান পানু বলেন, “আমি তাড়াতাড়ি এই ফাঁসির রায় কার্যকর দেখতে চাই।”

রায়ের পর কামারুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলাসহ জেলার সর্বত্র আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ করা হয় কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে। 

এর মধ্যে সোহাগপুরে ১২০ জন পুরুষকে ধরে নিয়ে হত্যার অভিযোগে আপিল বিভাগের চার বিচারপতি সর্বসম্মতভাবে কামারুজ্জামানকে দোষী সাব্যস্ত করেন।

একাত্তরের ২৫ জুলাই ভোরে সোহাগপুর গ্রামের ১২০ জন পুরুষকে হত্যা ও গ্রামের নারীদের ধর্ষণ করা হয়।

এক গ্রামে একসঙ্গে এতজন পুরুষকে হত্যার পর গ্রামের অধিকাংশ নারীকে অকালে বৈধব্য নিতে হয়েছিল, যে কারণে সোহাগপুর ‘বিধবাদের গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।