শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এমন দৃশ্যের অবতারণা হয় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের দীর্ঘ বক্তব্যে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন নামে একটি সংগঠন ওই আলোচনার আয়োজন করে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. ইসমাইল উপস্থিত ছিলেন অতিথি হিসাবে।
প্রধান অতিথি কামাল হোসেনের ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্যের মধ্যেই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন মান্না। তার আগে পুরো সময় জুড়ে ফোনে কাজ করতে দেখা যায় তাকে।
এ সময় শ্রোতাদের কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়- কামাল হোসেন সাহেবের টানা বক্তব্যে অধৈর্য হয়ে তারই বিকল্প রাজনীতির সারথি চলে যাচ্ছেন।
এক পর্যায়ে বক্তব্য সংক্ষেপ করার জন্য গণফোরাম সভাপতিকে অনুরোধ জানান শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি ইসমাইল।
এতে ক্ষোভ ঝরে কামালের কণ্ঠে: “এভাবে বক্তব্য সংক্ষেপ করতে বলবেন না। আমার সময়ের দাম আছে। আমি বক্তব্য সংক্ষেপ করবো না। যতক্ষণ ইচ্ছে বলব... প্রয়োজনে তিন ঘণ্টা কথা বলব।”
বক্তব্যে শ্রমিক অধিকার আদায়ে আইনজীবী হিসেবে তার ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন কামাল হোসেন।
শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্তের নানা ঘটনা তুলে ধরে কামাল হোসেন বলেন, “গার্মেন্টস মালিক, সরকার, শ্রমিক ও ক্রেতাদের নিয়ে আলোচনা করেই সমস্যার সমাধান করতে হবে।”
বক্তব্যের মধ্যেই কামাল হোসেন আয়োজক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতির কাছে জানতে চান, বর্তমানে কয়টি শ্রমিকদের ফেডারেশন রয়েছে?
এর জবাবে ইসমাইল জানান, ৫৪টি ফেডারেশন রয়েছে।
কামাল হোসেন এবার বলেন: “সমন্বয় ছাড়া কিছু সম্ভব নয়। এখন দরকার সমন্বয়, সমন্বয়, সমন্বয়। একটি ফেডারেশন থাকা উচিত, ৫৪টি ফেডারেশন থাকা উচিত কিনা আপনি বলেন? বঞ্চিত মানুষদের ঐক্য হবে না?”
সব সংগঠনকে নিয়ে ঐক্য সম্ভব না হলেও ১০-১২টি সংগঠনকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবি আদায়ে আদালতসহ সবখানে সমস্যা সমাধানে এগোনোর সুপারিশ করেন তিনি।
সত্তরের কথা তুলে ধরে কামাল হোসেন জানান, ওই সময় অসম্ভবকে সম্ভব করা হয়েছিল; ব্রিটিশদের বিরুদ্ধেও ঐক্য হয়েছিল।
“অসম্ভবকে সম্ভব করাটাই ইতিহাসের অংশ। দলীয় ভিত্তিতে শ্রমিকদের বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে। শ্রমিকদের ঐক্য হতে পারে। কিছু পেতে হলে এ অসম্ভবকে সম্ভব করতে হবে।”
৫৫ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন বিষয়ে অবতারণা করা কামাল হোসেনের বক্তব্যে কার্যত অনুষ্ঠানের উপস্থিত শ্রোতা ও আয়োজকদের মধ্যে অধৈর্য দেখা যায়।
বক্তব্য শেষ করার তাগাদা শুনে তিন ঘণ্টা বক্তব্য রাখার ‘হুমকি’ দিলেও শেষ পর্যন্ত পাঁচ মিনিটের মধ্যে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।