সারাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয়

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Nov 2014, 07:32 AM
Updated : 1 Nov 2014, 10:53 AM

জাতীয় গ্রিডে ত্রুটির কারণে এমনটি ঘটেছে বলা হলেও কি ত্রুটি তা এখনো কেউ নিশ্চিত করতে পারেননি।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বেলা সোয়া ১টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাতীয় গ্রিড ফেল করেছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিছু কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ আসতে শুরু করেছে। পুরো সিকোয়েন্স ঠিক করতে আরও প্রায় ঘণ্টা খানেক লেগে যাবে।”

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়তে শুরু করে। এর পরই বিভিন্ন জেলা থেকেও খবর আসে সেখানেও বিদ্যুৎ নেই।

কুষ্টিয়া থেকে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, “বেলা ১১টা ২৯ মিনিটে ভেড়ামারা উপজেলার ষোলদাগ এলাকায় জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি দেখা দেওয়ার পর ব্ল্যাক আউট হয়েছে। ভারতীয় এবং বাংলাদেশি লাইনের সংযোগস্থলে ত্রুটিটি দেখা দিয়েছে।”

সঞ্চালন লাইন মেরামতে কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. মনিরুজ্জামান জানান, সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পর থেকে চট্টগ্রামের কেন্দ্রগুলো থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ হয়ে গেছে।

“স্থানীয় কেন্দ্রগুলোতে কোন সমস্যা নেই, বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর যদি সাপ্লাই না করা যায় রিজার্ভের কোন ব্যবস্থা বিদ্যুতের থাকে না। তাই এ কারণে চট্টগ্রামের যে কেন্দ্রগুলো আছে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নয়টি ইউনিটের উৎপাদন।

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারিগরি বিভাগের পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান জানান, ভেরামারা বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের ত্রুটির কারণে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দেয়। এরপরই বেলা ১২টার দিকে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬টি ও রেন্টালের ৩টি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

জাতীয় গ্রিড লাইন মেরামতে প্রকৌশলীরা কাজ শুরু করলেও কখন চালু করা সম্ভব হবে তা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তিনি।

সাজ্জাদুর রহমান জানান, একযোগে ৯টি ইউনিট বন্ধ হওয়ার কারণে জাতীয় গ্রিডে প্রায় একহাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের রংপুর অঞ্চলের প্রধান প্রকোশলী এবিএম মিজানুর রহমান জানান, সেখানে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিদ্যুৎ নেই। ন্যাশনাল গ্রিডে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী ও আবাসিক প্রকোশলী সৈয়দ আবু হেনা মোস্তফা বলেন, “সকাল ১১টা ২৫ মিনিট থেকে ন্যাশনাল গ্রিডে সমস্যা দেখা দেওয়ায় সিরাজগঞ্জসহ পুরো বিভাগের কোথাও বিদ্যুৎ নেই।”

জাতীয় গ্রিড লাইনে ত্রুটির কারণে সারাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটলেও ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিনটি ইপিজেডে সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করেছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কার্যালয়ে ফোন করে জানান, তারা ঢাকা ইপিজেড এবং চট্টগ্রাম ও কর্ণফুলী ইপিজেডে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে যাচ্ছেন। 

চট্টগ্রাম ইপিজেডের ব্যবস্থাপক আহসান কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করে এর সত্যতা মিলেছে।

তিনি জানান, চট্টগ্রামে দুটি ইপিজেড মিলে ১৭০টি কারখানা রয়েছে। নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থাকায় সেখানে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।  ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন এই তিনটি ইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।