যুদ্ধাপরাধীদের জন্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমা নয়: ইমরান

রাষ্ট্রপতির ক্ষমার সুযোগ নিয়ে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের ছাড়া পাওয়া ঠেকাতে তাদের ক্ষেত্রে ক্ষমার এই বিধান রহিত করতে সংবিধান সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদক ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2014, 06:37 PM
Updated : 31 Oct 2014, 06:37 PM

সরকারকে সংবিধান সংশোধন করতে বাধ্য করার জন্য প্রয়োজনে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার শুরু হওয়া গণজাগরণ মঞ্চের দুই দিনের জাগরণযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে একাধিক জেলায় অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে এই আহ্বান জানান তিনি।

সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রিভিউ পিটিশন বাতিল, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ ছয় দফা দাবিতে মানিকগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার দুপুরে ১২টায় মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড মোড়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইমরান বলেন, “রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিধান যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে রহিত করতে হবে। তা না হলে এই যু্দ্ধাপরাধীরা মুক্তি পেয়ে দেশে জাতীয় পতাকা নিয়ে ঘুরবে। আমরা এইটা চাই না, এটার দ্রুত রহিতকরণ করতে হবে।”

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, “৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এসেও সরকার জনগণের পাশে থাকছেন না। মানুষকে রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কীভাবে এ সরকার দেশের শান্তি ও সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনবে?”

মানিকগঞ্জ থেকে রওনা দিয়ে বাস ও মাইক্রোবাস যোগে জাগরণযাত্রার বহর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের ওয়াজির আলী হাইস্কুলের সামনে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে পৌনে ৫টার দিকে ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে মিছিল বের হয়।

মিছিলে স্থানীয় বাসদ, সিপিবি, উদীচী, ছাত্র ফ্রন্ট ও ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেয়। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যাণ্ডে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ পার্কে সমাবেশ হয়।

সমাবেশে ইমরান বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। অনেকে সাজা পেয়েছে, আরও কিছু ঝুলে আছে। আর সেগুলো নিয়ে এখন কালক্ষেপণ করা হচ্ছে।

“আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গতিশীল ছিল, বর্তমানে তা ঝুলে পড়েছে। সে দিক দিয়ে আমাদের হতাশা রয়েছে। যুদ্ধাপরাধী সাইদীর রায় দ্রুত পরিবর্তন করা হয়েছে। আমরা আমাদের প্রত্যাশিত বিচার পায়নি; এটি সঠিক বিচার হয়নি।”

রাষ্ট্রপতির যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমার বিধান বাতিল করতে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

ঝিনাইদহে সমাবেশ শেষে জাগরণযাত্রা চুয়াডাঙ্গার পথে রওনা দিয়ে সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে পৌঁছে।

সেখানে সমাবেশে ইমরান বলেন, “ছয় দফা দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি, যুদ্ধাপরাধিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। সেই সাথে তাদের শাস্তি নিশ্চিতও করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “জাগরণ যাত্রা শুরু করে চুয়াডাঙ্গা পর্যন্ত আসতে গিয়ে মানিকগঞ্জ, ঝিনাইদহে আমরা দেখেছি মানুষের উচ্ছ্বাস। মানুষ স্বাধীনতাবিরোধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার চায়।

“এক্ষেত্রে সরকার দ্রুত ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেবে বলে প্রত্যাশা করে গণজাগরণ মঞ্চ।”

এর আগে জাগরণযাত্রা চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছালে উদীচী, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা তাদের স্বাগত জানায়।

দুদিনের কর্মসূচিতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাতটি জেলা সফরের লক্ষ্য নিয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে মেহেরপুরে যায় জাগরণযাত্রা। সেখানে সমাবেশ শেষে তারা কুষ্টিয়ায় রাত্রিযাপন করবেন।