কাত্যায়নী পূজা: মাগুরায় চলছে উৎসব

ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজাকে ঘিরে মাগুড়ায় পাঁচ দিনব্যাপী উৎসব চলছে। দেশের নানা জেলা থেকে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে জেলা শহর পেয়েছে নতুন রূপ।

মাগুরা প্রতিনিধিঅলক বোস, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2014, 03:24 PM
Updated : 31 Oct 2014, 03:24 PM

সন্ধ্যা থেকে শেষ রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীরা শহরের ঢাকা রোড় থেকে বাটিকাডাঙ্গা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পূজা মণ্ডপগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছেন ক্লান্তিহীনভাবে।

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) শুরু হওয়া এ পূজা চলবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত।

শহরের পূজা মণ্ডপগুলোয় নির্মাণ করা হয়েছে ঝলমলে তোরণ, প্যান্ডেল ও আলোক সজ্জা। নানা আকার-আকৃতি ও রংয়ের প্রতিমা তো রয়েছেই।

পূজা উপলক্ষে আয়েজিত মেলায় সাজানো হয়েছে নানা পণ্যের পসরা। পূজা দেখার পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভীড় করছেন মেলায় আসা দোকানগুলোতে।              

সাবর্জনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পংকজ কুমার কুন্ডু জানান, গত ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে এ পূজা, যা চলবে আগামী ২ নভেম্বর রাত পর্যন্ত। ২ নভেম্বর রাতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পূজা শেষ হবে। তবে পূজা উপলক্ষে মেলা চলবে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত।

এ বছর জেলায় ৫৭টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। শুধু মাগুরা শহরে হচ্ছে ৯টি পূজা।

পংকজ কুন্ডু আরও জানান, গত প্রায় একশ বছর ধরে দুর্গা পূজার এক মাস পর জেলায় এ পূজা পালিত হয়ে আসছে।

শহরতলীর পারনান্দুয়ালী এলাকার সতিশ মাঝি এটির সূচনা করেছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে যা ব্যাপক বিস্তৃতি পায়। এটা জেলার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা হলেও এ উৎসবে মিলিত হয় সকল ধর্মের মানুষ, যা জেলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন।

বিভিন্ন জেলা ছাড়াও ভারত-নেপালসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ এ পূজা উপলক্ষে এখানে আসেন বলে তিনি জানান।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব কুন্ডু জানান, ধর্মীয় শাস্ত্রমতে দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের আগে গোপীবালাবৃন্দ যমুনা নদী তীরে শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর, বন্ধু, স্বামী, পুত্র হিসেবে আরাধনা করত।

তাদের একমাসব্যাপী আরাধনা সে সময় কাত্যায়নী পূজা হিসেবে চিহ্নিত হতো, যার সময়কাল ছিল কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস।

প্রতিমা স্থাপনের ক্ষেত্রে দুর্গা পূজার আদলেই সবকিছু নির্মিত হতো। তবে অতিরিক্ত হিসেবে দেবী দুর্গার কোলে শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়, যার অর্থ দেবী দুর্গার আরাধনার মাধ্যমে কৃষ্ণের সান্নিধ্য পাওয়া। এটিই হচ্ছে মাগুরার কাত্যায়নী পূজার ধর্মীয় যোগসূত্র।

মাগুরার সহকারী পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় জানান, পূজায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতির কারণে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এজন্য জেলার পাশাপাশি বাইরের জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছে।

তিনি জানান, গোয়েন্দা নজরদারীর পাশাপাশি পূজা এলাকায় ভিডিও ও সিসি ক্যামেরাও বাসানো হয়েছে। এছাড়া টহল দিচ্ছে র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা।