দরিদ্রদের বসতির জন্য পৌরসভায় জমি চান পূর্তমন্ত্রী

প্রতিটি উপজেলা সদরে দরিদ্র মানুষদের আবাসন গড়ে তোলার জন্য পৌরসভার মেয়রদের কাছে জমি চেয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশররফ হোসেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2014, 02:13 PM
Updated : 31 Oct 2014, 07:13 PM

শুক্রবার রাজধানীতে বিশ্ব নগর দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী বলেন, “পরিকল্পিত নগরায়নের জন্য আমরা কাজ করছি। বিশেষত বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলায় দরিদ্র মানুষদের জন্য আবাসন গড়ে তোলার একটি প্রকল্প নিয়ে ন্যাশনাল হাউজিং অথরিটি কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ৪৫টি উপজেলায় দরিদ্র মানুষদের আবাসন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

“আমি দেশের সব মেয়রদের আহ্বান জানাব, তারা যেন তাদের এলাকায় ন্যাশনাল হাউজিং অথরিটিকে জমি দিয়ে সহযোগিতা করেন। তবে তা অবশ্যই অকৃষি/ অনাবাদী জমি হতে হবে। জমি পেলেই আমরা (দরিদ্র মানুষদের জন্য) পরিকল্পিত আবাসন করে দেব।”

দেশে অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, “এখনই সময়, একটি সঠিক পরিকল্পনা করার। নগরায়ন হবে, তবে তা কখনোই কৃষিজমি ধ্বংস করে নয়।”

ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করতে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।

আলোচনা সভায় ঢাকা শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অসঙ্গতি তুলে ধরেন বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজিবর রহমান।

তিনি বলেন, “ঢাকা শহরে এক কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস। এখানে প্রতিদিন দেড় লাখ টন পয়োবর্জ্য ‍তৈরি হয়। পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণে আমাদের নদীগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বা গিয়েছে।”

বুয়েটের নগর পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক সারোয়ার জাহান বলেন , “পয়োবর্জ্য যদি যথাযথ রিসাইক্লিংয়ের মধ্যে না আনা যায়, আমাদের সারফেস ওয়াটারের রিসোর্সগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা খুব বেশিদিন আন্ডারওয়াটার রিসোর্সের ওপর নির্ভর করে থাকতে পারব না।”

বিষয়টি স্বীকার করে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, “এটা নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা কিছু কিছু কাজ শুরু করেছি। পূর্বাচল এবং আরো দুই একটা- যেসব স্যাটেলাইট সিটি গড়ে উঠেছে, সেগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়দায়িত্ব তাদের।

“ইতিমধ্যে রাজউককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিট না থাকলে যেন কোনো বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদন না দেয়া হয়।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মঞ্জুর হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (নগর উন্নয়ন) অশোক মাধব রায়, নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের বিশেষজ্ঞ গোলাম রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক শাহাদাত হোসেন ও হ্যাবিটেট ফর হিউম্যানিটি বাংলাদেশ শাখার প্রতিনিধি জন আর্মস্ট্রং।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন পৌরসভার ৪০ জন মেয়র, ৫২ জন কাউন্সিলর ও ২২ জন পৌর প্রকৌশলী।