‘বাল্যবিবাহ নয়, শিশুবিবাহ বলুন’

নির্ধারিত বয়সের আগের বিয়েকে ‘বাল্যবিবাহ’ না বলে ‘শিশুবিবাহ’ বলার পক্ষে মত দিয়েছেন শিশু অধিকার নিয়ে এক সেমিনারের বক্তারা, যাতে সায় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টাও।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2014, 12:28 PM
Updated : 31 Oct 2014, 05:45 PM

শুক্রবার ‘ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ইন সোস্যাইটি: প্রোটেকটিং রাইটস অব চিলড্রেন’ শীর্ষক এ সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি বছর যে বিয়ে হচ্ছে, তার ৬৬ শতাংশ ক্ষেত্রে বর বা কনে থাকছে অপরিণত বয়সী।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফ আয়োজিত এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ ফর প্রোগ্রামড অ্যাকশনের (উদ্দীপন) পরিচালক মো. এমরানুল হক চৌধুরী এবং বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সঠিক অর্থ নির্দেশ করতে অপরিণত বয়সের বিয়েকে বাল্যবিবাহ না বলে ‘শিশু বিবাহ’ বলা উচিৎ। সেমিনারের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীও এর সঙ্গে সহমত জানান।

শিশু অধিকার রক্ষা ও শিশু নির্যাতন রোধে সরকারের পদক্ষেপগুলোতে এখনো ‘সমন্বয়হীনতা’ থাকার কথা স্বীকার করলেও রিজভী বলেন, বিষয়টি কেবল সরকার কিংবা সামাজিক সংগঠনের দায়িত্ব নয়; এক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।

“শিশু আদালত কাগজে আছে বাস্তবে নেই। এটা কার্যকর করা দরকার।”

সাত লাখ শিশু এখনো রাস্তায় বসবাস করছে জানিয়ে তিনি বলেন, উদ্যোগ নিলে সরকারের পক্ষে তাদের পুনর্বাসন সম্ভব।

২৫ বছর পূর্তিতে বছরব্যাপী রজতজয়ন্তী উৎসবের অংশ হিসাবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সেমিনারের আয়োজন করে পিকেএসএফ। এতে সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফের সাধারণ পর্ষদ সদস্য বন্দনা সাহা।

বর্তমান আইনে বাংলাদেশে মেয়েরা বিয়ের যোগ্য হয় ১৮ বছর বয়সে, জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী ওই বয়সেই শৈশব শেষ হয়। জাতিসংঘ নির্ধারিত এই বয়সসীমার প্রতিও বাংলাদেশের সমর্থন রয়েছে।

কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করেই বিয়ের বয়স কমিয়ে ১৬ বছর করার বিষয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রস্তাব ওঠে।

ওই প্রস্তাবকে বিবেচনায় নিয়ে তা নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনারও সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।  এরপর দেশের বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচও ওই প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করে।

পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতেই তারা এ বিষয়ে সুপারিশ তৈরি করবেন।