সনদ জালিয়াতি: চাকরি গেল ২১ প্রভাষকের

যশোরের কেশবপুর উপজেলার কেশবপুর ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক নিবন্ধন সনদপত্রে জালিয়াতির ঘটনায় ২১ জন প্রভাষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2014, 09:24 AM
Updated : 31 Oct 2014, 09:24 AM

এছাড়া অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অধ্যক্ষসহ দুই শিক্ষককে করা হয়েছে সাময়িক বরখাস্ত।

কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রেবা ভৌমিক জানান, প্রভাষকদের ভুয়া নিবন্ধন সনদপত্রে নিয়োগ এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পর গত জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মজিবর রহমান এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাশেদুজ্জামান বিষয়টি তদন্ত করেন।

"তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার কলেজ পরিচালনা পরিষদের এক সভায় অধ্যক্ষ রফিকুল বারী ও কম্পিটার শিক্ষক বুলবুল কুদ্দুসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ২১ জন প্রভাষককে চাকরিচ্যুত করা হয়।"

প্রভাষকদের মধ্যে সাচিবিক বিদ্যার কবিরুল ইসলাম, হিসাব বিজ্ঞানের রাবেয়া খাতুন, ইসলামি ইতিহাসের মাদেরুজ্জামান ও ইতিহাসের গোবিন্দ ঘোষকে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদপত্রের কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

এছাড়া নিবন্ধন সনদ ছাড়াই চাকরি করায় ইসলামের ইতিহাসের ফারজানা খাতুন, দর্শনের রেবেকা খাতুন, বাবুল আকতার ও তরিকুল ইসলাম, ইতিহাসের আসমা খাতুন, শাহ আলম ও মনিরুজ্জামান, ভূগোলের গোলাম ফারুক ও বাহারুল আলম, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের রুনা লায়লা, ব্যবস্থাপনা বিভাগের তোফাজ্জেল হোসেন, হিসাব বিজ্ঞানের হাবিবুল্লাহ বিলালি, বাংলা বিভাগের মেহেদি হাসান, ফজলে খোদা, অর্থনীতির হুমায়ুন কবিরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

অধ্যক্ষের সাময়িক বরখাস্তের পর উপাধ্যক্ষ জামাল উদ্দীন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ সিদ্ধান্ত দ্রুত মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে বলে জানান কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রেবা ভৌমিক।

তিনি জানান, দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গত ২২ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তদন্ত প্রতিবেদনে অধ্যক্ষ রফিকুল বারী ও কম্পিটার শিক্ষক বুলবুলের বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম ও আত্মসাত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

"একই সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন ব্যবস্থাপনা বিভাগের (বিএম শাখার) দুই প্রভাষকসহ কলেজের ২১ জন প্রভাষক ভুয়া শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জমা দিয়ে চাকরি করায় তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত চাকরিচ্যুত করার সুপারিশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।"

তবে অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত নন দাবি করে অন্যায়ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ রফিকুল বারী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "যে সময়ে অর্থ আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে সে সময়ে কলেজের সভাপতি ছিলেন সংসদের সাবেক হুইপ স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল ওহাব। প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির কাছে আমি নিরূপায় ছিলাম।"

অধ্যক্ষের অভিযোগের বিষয়ে সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাবের সঙ্গে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি অধ্যক্ষের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তদন্ত কমিটিকেই দোষারোপ করেন।

জনাব ওহাব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "তদন্ত কমিটি গায়ের জোরে সব কিছু করেছে। কোন অনিয়ম হয়নি ওই সময়।"

তদন্ত প্রতিবেদন থেকে দরপত্র ও বিল-ভাউচার ছাড়া এক লাখ ৩২ হাজার ৫৭১ টাকার একটি কাজের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ওইগুলো কি সরকারি কাজ? যে টেন্ডার করতে হবে? কোন কিছুতে কোন অনিয়ম নেই।"