সাতখুন: র‌্যাবের রুহুলেরও ‘দোষ স্বীকার’

তিন কর্মকর্তাসহ ১০ র‌্যাব সদস্যের পর এবার সাত খুনের ঘটনায় ‘দোষ স্বীকার’ করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন, ঘটনার সময় যিনি নারায়ণগঞ্জে র‌্যাবে কর্মরত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এইচ এম শফিকুল ইসলামের আদালতে সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় তিনি জবানবন্দি দেন বলে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন জানান।  

“ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন রুহুল আমিন,” বলেন তিনি।

জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের দুই দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে।

নদী থেকে লাশ উদ্ধারের পর কর্মস্থল থেকে পালিয়ে যান ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন। প্রায় পাঁচ মাস পর কোরবানির ঈদের পরদিন গত ৭ অক্টোবর পটুয়াখালীর বাউফল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের মাধ্যমে চার দফায় মোট ২৪ দিনের রিমাণ্ডে নিয়ে রুহুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত বলেন, “র‌্যাবের গ্রেপ্তার এ সদস্য শক্ত প্রকৃতির লোক। তাকে এ মামলায় এর আগে তিন দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। চতুর্থ দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি সাত খুনের ঘটনায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেন।

“জবানবন্দিতে সাতজনকে অপহরণ, হত্যা ও লাশ গুম এবং হত্যায় কারা কারা জড়িত ছিলেন সেসব বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। সাত জনকে অপহরণের সময় রুহুল আমিন গাড়ির চালক ছিলেন।

“অপহরণের পর ইনজেকশন দিয়ে এবং মাথায় পলিথিন পেঁচিয়ে তাদের হত্যা করা হয় বলে আগে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়া র‌্যাব কর্মকর্তারা আদালতে উল্লেখ করেছে। রুহুলও তার জবানবন্দিতে সেসব বিষয় স্বীকার করেছেন।”

এ ঘটনায় এর আগে র‌্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডার তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ তিন শীর্ষ কর্মকর্তা ‘দোষ স্বীকার’ করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। রুহুলকে নিয়ে গ্রেপ্তার মোট ১১ র‌্যাব সদস্যের মধ্যে ১০ জনই ‘দোষ স্বীকার’ করলেন। আর গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ২৪ জনকে।