এ ঘটনা নিয়ে বিএনপি নেতাদের ‘কৃতজ্ঞতাবোধ’ নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি।
একটি অনলাইনে ‘তারেকের নির্দেশে আযমের জানাযা বর্জন করল বিএনপি’-শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন নিজের ফেইসবুক পেইজে শেয়ার করে তাতে এ মন্তব্য করেন সেনাবাহনী থেকে বহিষ্কৃত আযমী।
তিনি লিখেছেন, “অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুর পর পুরো বিশ্ব শোক করলেও বিএনপির নীরবতায় পুরো জাতি হতাশ। আমি জানি না কেন!
“আমার এটা বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে, জামায়াতের সমর্থন ছাড়া বিএনপি কখনোই সরকার গঠন করতে পারতো না। দুঃখের বিষয়, এই দলের প্রতিষ্ঠাতা আমির এবং আমৃত্যু আধ্যাত্মিক গুরুর মৃত্যুতে তাদের নীরবতা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য!”
“তারা কতো অকৃতজ্ঞ হতে পারে!!!”
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আযমীর এই পোস্ট ১২১ জন শেয়ার করেছেন এবং লাইক দিয়েছেন প্রায় পাঁচশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বৃহস্পতিবার দুপুরে টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হ্যাঁ, আমি আব্দুল্লাহিল আমান আযমী নামে ফেসবুক ব্যবহার করি এবং আমারটা আমি অপারেট করি।”
নিজের ফেইসবুক পৃষ্ঠার প্রোফাইল ও ব্যানারে আযমী ব্যবহার করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থাকাকালে বাহিনীর পোশাক পরিহিত দুটি ছবি।
ওই পোস্ট নিয়ে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিউজটা পোস্ট করে আমি আমার মতামত দিয়েছি।.......
“এটা দুঃখজনক ব্যাপার ছিল। কেউ কনফার্ম করতে পারে কি না তার জন্যে পোস্টটা দিয়েছি।”
আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বৃহস্পতিবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে বলেন, তার এই মন্তব্য নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে তিনি শুক্রবার আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়ে তা স্পষ্ট করবেন।
বিএনপিকে নিয়ে জোট শরিক দলের সাবেক আমিরের ছেলের এই মন্তব্যে দুই দলের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই গোলাম আযমের ছেলে তা স্পষ্ট করার কথা বলেন।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ওই টেলিভিশনকে আরও বলেন, বর্তমানে ‘অসুস্থ ধারার’ রাজনীতি চলছে বাংলাদেশে।
বাবার দল জামায়াতে যোগ দেবেন কি না- জানতে চাইলে সরাসরি কোনও উত্তর দেননি তিনি।
২০০৯ সালের ২৩ জুন সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের পদ থেকে আযমীকে বরখাস্ত করা হয়। পরে আদালতে গিয়েও পক্ষে কোনও সিদ্ধান্ত পাননি তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধিতার প্রতীক গোলাম আযম ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াতে ইসলামীর আমির। একাত্তরে মানবিতাবিরোধী অপরাধে ৯০ বছরের কারাভোগের মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর মারা যান তিনি।
গোলাম আযমের মৃত্যুতে জামায়াতের দীর্ঘদিনের জোট শরিক বিএনপির পক্ষ থেকে কোনও শোক জানানো হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ছাড়া গোলাম আযমের শোক মিছিল কিংবা জানাজায় বিএনপির নীতি-নির্ধারকদের অন্য কাউকে দেখা যায়নি।