বুধবার নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন ছাত্রলীগের বিবদমান পক্ষের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠকে দুই নেতাই ‘অভ্যন্তরীণ’ কোন্দল মিটিয়ে ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তি’ ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে ছাত্রলীগ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর ধরেই শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক দল-উপদল এবং সদ্যবিলুপ্ত ছাত্রলীগের কমিটির বিভিন্ন পক্ষ মহিউদ্দিন ও নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
দুপুরে নগরীর জিইসি মোড়ে একটি রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত সভায় বিবদমান সব পক্ষকে যেকোনো মূল্যে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানান নগর আওয়ামী লীগ নেতারা।
তারা বলেন, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে বিভাজন সৃষ্টিকারী ও সংগঠন থেকে বহিষ্কৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতিও আহ্বান জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সভাপতি মামুনুল হক, সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি অমিত কুমার বসু, শাহাদাত হোসেন জুয়েল, মোস্তফা সাইফুল ইসলাম রোমেল, আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন মামুন, দিয়াজ ইরফান চৌধুরী ও নূর মোহাম্মদ নাজমুল প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
গত ১০ জুন সকালে ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক দুটি দলের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন আহত হওয়ার পর বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
২০১১ সালের ২৫ জুন ঘোষিত ওই কমিটিতে মামুনুল হককে সভাপতি ও এস এম খালেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তবে কমিটি বিলুপ্ত করার অনেক আগে থেকেই দৃশ্যপটে ছিলেন এই দুই নেতা।
গত বছরের ২৭ অগাস্ট সংবাদ সম্মেলন করে বিলুপ্ত কমিটির কয়েকজন নেতা সভাপতি মামুনুলকে ‘শিবির ঘেঁষা’ আখ্যায়িত করেন। এরপর সংগঠনে শুরু হয় দল-উপদলে বিভক্তি।
চলতি বছরের ৫ এপ্রিল মহিউদ্দিন চৌধুরীর উপস্থিতিতে ক্যাম্পাসে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে এক পক্ষের হাতে লাঞ্ছিত হন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির হায়দার চৌধুরী বাবুল।
এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি ও প্রক্টরের পদত্যাগ চেয়ে ৭ মে থেকে ক্যাম্পাসে অবরোধের ডাক দেয় নাসিরের অনুসারীরা।
সেসময় ছাত্রলীগের নেতারা এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেন নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে।
এর পর শিবির-ছাত্রলীগের পৃথক সংঘর্ষের পর বন্ধ থাকা দুটি হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ‘হলের আবাসিক শিক্ষার্থীর’ ব্যানারে শিবিরের ডাকা ধর্মঘটের মধ্যে ১০ সেপ্টেম্বর শিক্ষকদের দুটি বাসে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষকসহ মোট ১৪ জন আহত হন।
এই ঘটনার পরও ঐকবদ্ধ হতে পারেনি ছাত্রলীগ। এরপর চলতি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় কয়েক দফায় রাতের আঁধারে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষ।
সবশেষ গত সপ্তাহে নগরীতে বিবদমান দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনও করে।