মওদুদী প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান ভিত্তিক এই ছাত্র সংগঠনটির ওয়েবসাইটে সাবেক ‘নাজিমে আলা’ অর্থাৎ সভাপতিদের তালিকায় এখনও রয়েছে তার নাম।
বাংলাদেশে ছাত্রসংঘ নামে পরিচিত একাত্তরে আলবদর বাহিনী গঠনকারী এই সংগঠনের মূল নাম জমিয়তে তালাবা। পাকিস্তানে এখনও ওই নামে চলে তাদের কার্যক্রম।
জমিয়তে তালাবার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে বার্ষিক সম্মেলনে প্রথমবারের মতো নিজামীকে নাজিমে আলা নির্বাচিত করা হয়। লাহোরে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে ২৩৪০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃতুদণ্ড কার্যকর হওয়া এই বদর প্রধান মাদ্রাসায় স্নাতক পর্যায়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় ১৯৬১ সালে জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সঙ্গে যুক্ত হন।
পাশাপাশি বলা হয়েছে, একাত্তরে পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের আত্মসমর্পণের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থানরত জমিয়েতে তালাবার কর্মীরা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের শিকার হন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জামায়াতের রাজধানী নিষিদ্ধ হলেও সেই ছাত্রসংঘ ইসলামী ছাত্রশিবির নামে ফিরে আসে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে পাবনার বাউশগাড়ি, ডেমরা ও রূপসী গ্রামের প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষকে হত্যা ও ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ; পাবনার ধুলাউড়ি গ্রামে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৫২ জনকে হত্যা এবং পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী গণহত্যার অপরাধে বুধবার প্রথম প্রহরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের উত্তরসূরি হিসাবে ২০০০ সালে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে আসা মতিউর রহমান নিজামীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ৩১ মার্চ, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মনমথপুর গ্রামে।
স্থানীয় বোয়ালমারি মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করা নিজামী কামিল পাস করেন ১৯৬৩ সালে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে। এরপর প্রাইভেট শিক্ষার্থী হিসাবে ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন।
১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর এপ্রিলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে মূলত ছাত্রসংঘের কর্মীদের নিয়ে গড়ে তোলা হয় আল বদর বাহিনী। আর ছাত্রসংঘের নেতা হিসাবে আল বদরের নেতৃত্বও নিজামীর কাঁধে বর্তায় বলে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নিজামী ফের প্রকাশ্যে আসেন জিয়ার আমলে। ২০০০ সালে যুদ্ধাপরাধের হোতা গোলাম আযম অবসরে গেলে নিজামী দলের আমির নিযুক্ত হয়েছিলেন।