সীমান্তে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: বুধবার পতাকা বৈঠক

হবিগঞ্জ সীমান্তের ওপারে ভারতীয় গ্রামে পিটুনিতে নিহত তিন বাংলাদেশির লাশ ফেরত পেতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকে বসছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2014, 04:15 AM
Updated : 29 Oct 2014, 04:15 AM

বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়ানের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।  সেখানে লাশগুলো দেশে ফেরত আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

তিনজনের লাশ ভারতের খোয়াই জেলা পুলিশের কাছে রয়েছে বলেও জানান এই বিজিবি কর্মকর্তা।

নিহতরা হলেন- হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের করম আলী (৪০), সুজন মিয়া (২২) ও আক্কল মিয়া (১৯)।

মঙ্গলবার এই তিনজনকে চুনারুঘাট সংলগ্ন ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই জেলার বিশ্বমনি আখড়াইবাড়ি এলাকায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার ভোরে আলীনগর গ্রামের পাঁচজন গরু ব্যবসায়ী খোয়াই শহরের একটি গ্রামে গরু কিনতে যায়। এ সময় ভারতীয়রা তাদের চোর সন্দেহ করে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিন জনের মৃত্যু হয়। বিকালের দিকে দুই জন পালিয়ে এসে এলাকায় খবর দেন।

গাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম পরে ঘটনাটি বিজিবিকে জানান।

চেয়ারম্যান তাজুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়টি আমি বিজিবিকে জানিয়েছি। বিজিবি জানিয়েছে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।”

সীমান্ত থেকে ভারতের দুই কিলোমিটার ভেতরের এলাকা চম্পাহাওড় থানার ওসি উত্তম ভৌমিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোরের দিকে সন্দেহভাজন বাংলাদেশি একদল গরুচোর গ্রামে ঢুকলে গ্রামবাসী তাদের ধাওয়া করে। ওই সময় অনুপ্রবেশকারীরা পাইপ গান থেকে গুলি ছুড়লে গ্রামবাসী ভানু দেববর্মা (৬০) আহত হন। তখন গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে ওঠে।”

যে ব্যক্তি গুলি ছুড়েছিল সে পালিয়ে গেলেও দলের তিনজন পথ ভুল করলে গ্রামবাসী তাদের ধরে ফেলে এবং ব্যাপক মারধর করে বলে ওসি উত্তম ভৌমিক জানান।

তিনি বলেন, গণপিটুনিতে দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। একজনকে গুরুতর অবস্থায় খোয়াই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে আগরতলা জিবি পান্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।

ঘটনাস্থল থেকে দুটি পাইপগান উদ্ধার করা হয়েছে বলেও ওসি জানান।

খোয়াই জেলায় সীমান্ত গ্রামে এই ধরনের ঘটনা ছয় মাস আগেও ঘটে। গত ৫ এপ্রিলের ওই ঘটনায় জেলার গৌরনগরে মজুমদারবাড়ি এলাকায় গরুচোর সন্দেহে গণপিটুনীতে  নিহত হন গাজীপুর ইউনিয়নের হাপ্টার হাওর গ্রামের ছিদ্দিক আলী (৫৫), আনোয়ার মিয়া (২৫) ও উসমানপুর গ্রামের উমর আলী (৩০)।