যৌন হয়রানির এ প্রবণতা গ্রামের তুলনায় শহরে বেশি বলেও এতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি দেশের সাতটি শহরে টানা দুই মাস জরিপ চালিয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইড এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত শহর গড়তে মঙ্গলবার শুরু হওয়া এক প্রচারাভিযান উপলক্ষে রাজধানীর স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, যুক্তরাজ্য সরকারের সহকারী মন্ত্রী লিন ফেদারস্টোন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী এই প্রচারাভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
জরিপে ২১টি দলগত আলোচনা ছাড়াও নির্যাতনের ১৫টি ঘটনা বিশ্লেষণ এবং ৫৬ জনের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। অভিজ্ঞতা বিনিময় হয় পুলিশ কর্মকর্তা, নগর পরিকল্পনাবিদ, যানবাহনের চালক, চালকের সহকারীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “গণপরিবহনসহ জনসমাগম স্থানগুলোয় নারীরা সবচেয়ে বেশি যৌন হয়রানির শিকার হন। ৮৪ শতাংশ নারী অনাকাঙিক্ষত কটূক্তি ও অশোভন আচরণের মুখে পড়েছেন। ৫০ শতাংশ নারী রাস্তাঘাটে কুপ্রস্তাব পেয়েছেন এবং ৫৭ শতাংশ নারী অনাকাঙিক্ষত স্পর্শের শিকার হয়েছেন।”
অনূর্ধ্ব ২০ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে শতকরা ৭৬ ভাগ এবং ত্রিশোর্ধ্ব নারীদের মধ্যে শতকরা ৪৪ ভাগ যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে এতে বলা হয়।
লোকলজ্জায় চাওয়া হয় না প্রতিকার
অ্যাকশন এইডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হয়রানি বা নির্যাতন চরমে না পৌঁছালে নারীরা সাধারণত বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন না। ৫০ শতাংশ নারীই নির্যাতনের কোনো প্রতিবাদ করেন না। তবে ৫৪ শতাংশ তাদের পরিবারকে অবহিত করেন। আর ৪১ শতাংশ নারী তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার প্রতিবাদ করেন।
জরিপে অংশ নেয়া ৮৪ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর কোনো সংস্থা বা পুলিশকে তারা কিছু জানাননি।
নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিকার চাইতে গেলে পুলিশ উদাসীনতা দেখানোয় নির্যাতিতরা পুলিশের সহায়তা নিতে চান না বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
৬৫ শতাংশ নারী মনে করেন, পুলিশ উল্টো অভিযোগকারীকে দোষারোপ করে। আর ৫৭ শতাংশ বলেছেন, মামলা নিতে গড়িমসি করে পুলিশ।
৫৩ শতাংশ নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
যৌন হয়রানি রোধে আইন প্রণয়ন ও আইনের যথাযথ ব্যবহার করা প্রয়োজন বলে গবেষকরা মত দিয়েছেন।
নির্যাতিতদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা ও আইনি সহায়তার ব্যবস্থার পাশাপাশি সব থানায় ২৪ ঘণ্টা ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেল’ চালু করার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।