সোনালী ব্যাংকের রমনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ মহা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত রোববার দুপুরে ব্যাংকের ক্লিয়ারিং সেকশনের ড্রয়ার থেকে চেক চুরির ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে লালমাটিয়া শাখার সিনিয়ার অফিসার ফরিদা বেগমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া রমনা প্রিন্সিপাল অফিসের এজিএম মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, যার সদস্যরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট শাখায় গিয়ে কাজ শুরু করেছেন বলে কামরুজ্জামান জানান।
চেক চুরির ঘটনায় রাষ্ট্রায়ত্ত সর্ববৃহৎ এই বাণিজ্যিক ব্যাংকের তরফ থেকে সোমবার মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পুলিশকে দেওয়া হয়।
এরপর পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে বলে মোহাম্মাদপুর থানার ওসি আজিজুল হক জানান।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এসব চেক অন্য ব্যাংক বা সোনালী ব্যাংকেরই অন্য শাখা থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য জমা দিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে এসব চেকের টাকার অঙ্ক হবে কোটি টাকার মতো।
শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম খান অবশ্য দাবি করেছেন, চেকগুলোতে সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার হতে পারে। তবে শাখার কাছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট হিসেব নেই বলেও তিনি স্বীকার করেন।
এছাড়া পাটকল কর্পোরেশনের টেন্ডারে অংশ নেওয়া ঠিকাদারদের পে-অর্ডারও এর মধ্যে ছিল বলে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান।
মো. কামরুজ্জামান সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৫০ থেকে ৫৫টি চেক হারানো গেছে। এর মধ্যে ৪০টি চেকের ইরফরমেশন আছে। বাকিগুলো লেজারে তোলার আগেই চুরি গেছে।”
এদিকে ব্যংক কর্তৃপক্ষ সাধারণ ডায়েরি করার আগেই হারানো চেক ভাঙিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। রোববার চুরি যাওয়ার পরপরই রাজধানীর গুলশানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের লালমাটিয়া শাখায় হারিয়ে যাওয়া একটি চেক জমা দিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা হয় বলে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান।
এর আগে ফ্যানফোল্ড ভাউচার জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংকের ঢাকার মিরপুর শাখা থেকে ১৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র, যা আর ব্যাংক উদ্ধার করতে পারেনি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ধরা পড়ে, সোনালী ব্যাংকের শিল্প মন্ত্রণালয় শাখার জাহিদুল ইসলাম নামে এক কর্মকর্তা ভুয়া হিসাব খুলে বিভিন্ন গ্রাহকের একাউন্ট থেকে ও ব্যাংকের হিসাব থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের চিঠি দিয়ে এ ধরনের কর্মকর্তাদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল।
এছাড়া হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারি এবং বিভিন্ন স্থঅনে সুড়ঙ্গ কেটে টাকা চুরির ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের অনিয়ম ও নিরাপত্তার ত্রুটির বিষয়টি গত দুই বছর ধরে বার বার আলোচনায় এসেছে।