চট্টগ্রাম ভূমি অধিগ্রহণ দপ্তরে ‘শুদ্ধি অভিযান’র ষোষণা

চট্টগ্রামের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) দপ্তরে দালালদের আনাগোনা বন্ধে ‘শুদ্ধি অভিযান’ চালানোর ঘোষণা দিলেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2014, 09:02 AM
Updated : 26 Oct 2014, 09:02 AM
রোববার সকালে জেলা ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গত ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম ‍আদালত ভবন এলাকায় প্রায় ৫৮ লাখ টাকা নিয়ে ইলিয়াস ভুঁইয়া নামের এক ব্যক্তি ধরা পড়েন। ভূমি অধিগ্রহণ শাখার এক কর্মচারীর কাছে ওই টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে ইলিয়াস জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এ ঘটনার পর ইলিয়াসকে ‍আসামি করে মুদ্রা পাচার আইনে মামলা করে পুলিশ। ঘটনার পর ভূমি অধিগ্রহণ শাখার ১২ কর্মচারীকে বদলি করা হয়। নতুন করে ছয়টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও বসানো হয় ওই দপ্তরে।

রোববার পরিদর্শনে এসে ভূমি প্রতিমন্ত্রী জাবেদ বলেন, “কিছুদিন আগে একটা ঘটনা ঘটেছে- আমি তখন বিদেশে ছিলাম। বিদেশে থাকা অবস্থায় খবর নিয়েছি। এসেও খোঁজ নিয়েছি। এখন ঘুরে দেখলাম।”

ওই ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, “আসলে আমরা তো সবাই কাজ করছি সরকারের ভাবমূর্তি আরও কিভাবে উজ্জ্বল করা যায় সেজন্য। বিশেষভাবে আমাদের ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমি নিয়ে কিন্তু আমাদের অনেক দুর্নাম। এই দুর্নামকে সুনামে পরিণত করার জন্যই কিন্তু আমরা কাজ করছি।

“এই সময় এ বিষয়টা আমাদের জন্য একটা বড় ধাক্কা (বিগ ব্লো)। আশা করি এর পুনরাবৃত্তি হবে না। ভবিষ্যতে আরো কিভাবে ইমপ্রুভ করা যায়, দালাল চক্র যাতে এখানে না থাকে সেই দিকনির্দেশনা আমি দিয়েছি।”

ওই কার্যালয়ের বাইরেও এ সংক্রান্ত দুর্নীতি হয় জানিয়ে তা বন্ধের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা দেখি কী করা যায়। তাদের (দালালদের) মনিটর করব। অফিস আওয়ারে তারা কোথায় যায়। অন্য সময় কোথায় যায়। এরকম অনেক অভিযোগ আসে।”

দালাল চক্রের তালিকা করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি ইতিমধ্যে বলেছি। শিগগির আমরা একটা শুদ্ধি অভিযান চালাব।”

পরিদর্শনকালে ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি বন্ধে অধিগ্রহণের সময় প্রকল্প এলাকায় গিয়ে (অন দ্য স্পট) ক্ষতিগ্রস্তদের চেক বিতরণের নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী।

ভূমি অধিগ্রহণ কার্যালয়ের কার্যক্রম ডিজিটালাইজ করা হবে জানিয়ে জাবেদ বলেন, “ডিজিটালাইজেশনে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ইন্টেরিম ম্যানেজমেন্টে যাতে জনগণ হয়রানি না হয় এবং দুর্নীতি যাতে এখানে আসতে না পারে সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।

“আমাদের ডিভিশনাল কমিশনার ও  জেলা প্রশাসক সাহেব আছেন। উনাদের সাথে আলাপ হয়েছে। দেখা যাক কি হয়। তবে কোনো ধরনের অন্যায়-দুর্নীতি কিন্তু বরদাশত করব না। এটা আমার ক্লিয়ার মেসেজ। মন্ত্রণালয়ে যারা ‍আছেন তাদেরও একই কথা বলেছি। আমি কথায় নয় কাজে দেখতে চাই।”  

ডিজিটালাইজেশনে কতদিন লাগতে পারে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন,  সাম্প্রতিক সময়ে নরওয়ে, কোরিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ড এর ব্যবস্থা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।

“ন্যূনতম তিন বছর লাগবে। শুরুতে মনে করেছিলাম, আরও বেশি সময় লাগবে। যেটা চিন্তা করেছি প্রথম ডিজিটালাইজেশন আমরা মেট্রো এরিয়াগুলোতে করব। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে অন্য এলাকাগুলোতে যাব।”

পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন ও ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কর্মকর্তারা ছিলেন।