গৃহকর্মীরাও সাংসদের স্টিকার লাগানো গাড়িতে ঘোরে: কাদের

সাড়ে তিনশ সাংসদ থাকলেও সংসদ সদস্য লেখা স্টিকার লাগানো গাড়ির সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের বেশি রয়েছে বলে ধারণা করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2014, 02:56 PM
Updated : 25 Oct 2014, 03:34 PM

গৃহকর্মীদেরও গাড়িতে সংসদ সদস্য লেখা স্টিকার লাগিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন বলে জানান তিনি।

ফাইল ছবি

শনিবার তেজগাঁও সড়ক ভবনে এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এ সংসদে সাড়ে তিনশ সংসদ সদস্য, কিন্তু সংসদ সদস্যের নামে স্টিকার আছে সম্ভবত সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি। আমি এমনও দেখেছি বাসায় কাজ করে এমন লোকেরাও স্টিকার লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

“সত্যই এটি জাতীয় সংসদের অবমাননা। আমরা যে শপথ গ্রহণ করে সংসদ সদস্য হই তার অবমাননা।”

পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ নিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনা কঠিন কাজ, কেউ আইন মানতে চায় না। আমরা যারা আইন প্রণয়ন করি আমরাও অনেক সময় আইন ভঙ্গ করি, রাস্তায় চলতে গিয়ে অসাধারণ মানুষেরা ট্রাফিক রুল ভঙ্গ করে রং সাইডে যায়।

“সাধারণ মানুষ কিন্তু অনেক কিছু মেনে চলে; অসাধারণ মানুষরা রং সাইড দিয়ে যায়। পত্রিকায় সচিত্র রিপোর্ট আসে, তারপরেও তাদের শিক্ষা হবে বলে মনে হয় না।”

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাস উল্টোপথে চলা নিয়েও উষ্মা করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বিআরটিসির গাড়ি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেয়া হয়। সে গাড়িগুলো রং সাইড দিয়ে চলে। চালককে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে, তাকে বাধ্য করা হয়েছে। এটা যদি শিক্ষিত লোকেরা- আগামী দিনের নাগরিক ও আগামী দিনের নেতারা করে তাহলে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা কিভাবে ফিরিয়ে আনবো?”

চালকদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “গাড়ির চালকের আসনে বসেই স্টিয়ারিং ধরে পথের রাজা হয়ে যায়, যার উদাহরণ নাটোরের দুর্ঘটনা। রাস্তার কোনো সমস্যা ছিল না, গাড়ি ও চালকের-কারো ফিটনেস ছিল না।”

“ফিটনেসবিহীন গাড়ি ডাম্পিং করতে যাই- কয়টা রেখে কয়টাকে করব? আমার কাছে বিকল্পও নেই, নতুন বাস আনবো সেটাও দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে।”

বিআরটিসিতে নতুন ২০০টি বাস ও ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাস আনার অনুমতি চাইলেও এখনো তা মেলেনি বলে জানান তিনি।

বরাদ্দ না পওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, “৫০ বছর আগের যন্ত্রপাতি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। সনাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে আধুনিক সড়ক ব্যবস্থা করা হবে- এটা আশা করে তো লাভ নাই।

“যন্ত্রপাতির বরাদ্দ চেয়েও পাই না। যেভাবে কাজের বাস্তবায়ন চাচ্ছেন পুরনো রদ্দিমাল দিয়ে কি তা চলবে? কাজ করতে হলে কাজের হাতিয়ার তো লাগবে। তবে সাহস-মনোবল হারাইনি, এতো কিছুর মধ্যেও ছুটে বেড়াচ্ছি।”

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনের দপ্তরগুলোর প্রায় ৭০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ-টু-আই প্রকল্পের উদ্যোগে ‘কী পারফরমেন্স ইনডিকেটর অ্যান্ড পারফরমেন্স কনট্রাকটিং’ শীর্ষক এ কর্মশালা হয়।

অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সচিব এম এ এন ছিদ্দিকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।